“Ray” ওয়েব সিরিজের রিভিউ পড়ে নিন এক নজরে। কতটা রোমাঞ্চকর হতে পারল গল্প?
২০২০ সাল থেকেই ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট ভীষণ খারাপ যাচ্ছে। তবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বাজিমাত হয়েছে এই প্যান্ডামিকে।
মানুষ রিয়াল ট্যালেন্ট আর ভালো স্টোরির স্বাদ পেয়ে গেছে। আমাজন, নেটফ্লিক্স, ALT Balaji, MX player, Zee5 এর মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মরা বলিউডের মার্কেট অনেকটাই ডাউন করেছে।
তার জন্য এখন অনেক বলিউড স্টারেরাই চলে আসছে ওটিটি তে।
আর আবারও বলিউডের বেশ কিছু underrated অভিনেতা, অভিনেত্রীদের নিয়ে নতুন ওয়েব সিরিজ নিয়ে এলো Zee5 ওটিটি প্ল্যাটফর্ম।
“Ray” নামের এক ওয়েব সিরিজ নিয়ে আসল Netflix ওটিটি প্ল্যাটফর্ম।
“Ray” ওয়েব সিরিজ এর প্রথম পোস্টার রিলিজ হওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে।
সত্যজিত রায়ের গল্প অবলম্বনে সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত এই ওয়েব Netflix এ মুক্তি পেল অবশেষে।
ইতিমধ্যেই অনেক মানুষ পছন্দ করছেন “Ray” ওয়েব। তবে আমি আপনাদের আজ সম্পূর্ণ নিজের মতামতে সৎ রিভিউ দেওয়ার চেষ্টা করব।
“Ray” ওয়েব সিরিজের কাহিনী
Ray ওয়েব সিরিজ ৪ টে এপিসোড নিয়ে তৈরি হয়েছে চারটি এপিসোড প্রায় এক ঘন্টা করে।
চারটি এপিসোড চারটি গল্প। একের সাথে অন্যের সম্পর্ক নেই শুধু লেখক ও পরিচালক ছাড়া।
এই গল্প গুলো মূলত আমাদের সাধারন মানুষের জীবনের বেশ কিছু অ্যাডিকশন নিয়ে তৈরি হয়েছে। যার ফলে ছবিটি রিলেটেড মনে হচ্ছে অনেকেরই।
তাই চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক চার গল্পের সারাংশ।
১) রিভেঞ্জ:-
মানুষের অ্যাডিকশন এর মধ্যে রিভেঞ্জ একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। ব্যাস এই বিষয়কে কাজে লাগিয়ে এই সিরিজের প্রথম গল্প।
একটি ধনী ব্যবসায়ী যার মস্তিষ্ক কম্পিউটার এর থেকেও তুখোড়
ক্যালকুলেটর এর থেকেও যাকে সবাই বেশি বিশ্বাস করে, তার জীবনে এমন কিছুই ঘটতে থাকে যার ফলে তার মনে হয় যে, সে ধীরে ধীরে প্রথমে নম্বর, তারপর মানুষ ও এমনকি নিজের থেকে অনেক অনেক দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।
এই গল্পটি থ্রিলার, সাসপেন্স ও ড্রামা-এর মিশ্রণে ভরপুর আর যথেষ্ট পাওয়ার ফুল ডাইরেকশন।
২) ইগো :-
দ্বিতীয় অ্যাডিকশন “ইগো”। কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা, ঘৃণা, রাগ, দুঃখ, হাসি, কান্না সবকিছুর সাথে “ইগো” শব্দটা এমন ভাবেই বেড়ে ওঠে যে তা সেই মানুষটিকে সব কিছুর থেকে আলাদা করে রাখে।
এই গল্পে একজন লোক, অর্থাৎ গল্পের মুখ্য চরিত্র, একজন মেকাপ আর্টিস্ট। এনার জীবনের সমস্যা এটাকে সোসাইটির কেউ রেসপেক্ট করেনা।
তবে জীবনে টুইস্ট আসে যখন তার বড়োলোক দিদা মারা যাওয়ার পর, তার জন্য ৭৫ লাখ টাকা ও একটা রহস্যময়ী ডায়রি রেখে যায়।
ব্যাস তারপরেই ডায়েরি রহস্য নিয়ে ভগবান বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের ভবিষ্যত নিজেই লিখবে বলে ঠিক করে। তারপর কী হয়?
উত্তর জানার জন্য দেখতে হবে “Ray”.
৩) এনভি:-
“এনভি” অর্থাৎ “জ্বলন”, যা মানুষের আরো একটি অ্যাডিকশন।
সিরিজের তৃতীয় গল্প এক বড়ো পর্দার নায়কের। যার অস্তিত্ব সবসময়ই ক্যামেরার ফোকাসে থাকে। তার অভিনয়
কিন্ত তার জীবনে টুইস্ট আসে যখন এক মহিলা তার ফোকাস তার থেকে কেড়ে নেয় আর লিড রোগের অভিনেতা হয়ে যায় সাইড রোল।
তারপরেই আসে আসল ড্রামা। হিরো তার আগের অস্তিত্ব ফেরত পাবে? নাকি নতুন ফোকাসে থাকা অভিনেত্রীর জালে জড়িয়ে পড়বে?
উত্তর জানতে হলে দেখুন “Ray”।
৪) বিট্রেয়াল:-
বিট্রে করা মানুষের আরো একটি বড়ো অ্যাডিকশনের মধ্যে পড়ে। আমরা বেশির ভাগ সময় সেটাই দেখি যা আমাদের দেখানো হয়। তবে সেটা সবসময় সত্যি নাও হতে পারে।
আর এই সিরিজের পরের গল্প সবথেকে ইন্টারেস্টিং আমার মতে।
এই গল্পের হিরো একজন হাসি খুশি থাকা যুবক। তবে গল্পের শুরুতে হিরো একটি ট্রেনে আছে আর তার দেখা হয় এক ব্যক্তির সাথে যিনি যৌবন বয়সে একজন কুস্তি পালোয়ান ছিলেন।
এবং তাদের মনে হয় তারা আগে থেকে একে ওপরের পরিচিত।
তৃতীয় চরিত্র, একটি ঘড়ি যাতে শুধু সময় দেখা যায় না, সময় বদলানোও যায়।
এবার আমাদের হিরোর সময়ের কাটাছেঁড়া করে অবশেষে কী হয়? তার উত্তর জানার জন্য দেখতে হবে Ray.
খুব অল্প ভাষায় আমার মতে Ray একটি পারফেক্ট ওয়েব সিরিজ সেই সব দর্শকদের জন্য যারা অন্য রকম স্বাদের গল্প দেখতে ভালোবাসে।
তবে আমার মতে “এনভি” গল্পটি এই সিরিজের বাকি গল্প গুলোর থেকে একেবারেই আলাদা এবং মানানসই মোটেও নয়। কাহিনী, ডাইরেকশন, অ্যাক্টিং কোনোটাই বাকি তিন গল্পের মতো লেভেলে যেতে পারেনি।
এই গল্পটি বাদ দিলে Ray একটি পারফেক্ট ওয়েব সিরিজ হতে পারব।