আমরা যারা লেট নাইন্টিজ্, তাদের কিছুজনের ক্ষেত্রে বেশ অনেকটা বড়ো হয়ে ওঠা টেপরেকর্ডার আর রেডিও নিয়ে। একটু বড় হতে হতে প্রথম নচিকেতা শোনা। কি অদ্ভুত ভাবে সেসময়ে জানলা ধরে ‘রাজশ্রী তোমার জন্য’ কিমবা ‘নীলাঞ্জনা’ গেয়ে যেতাম সারাদিন। অফরুট শিল্পীদের কদর বরাবরই বেশি। গঠনমূলক, যুক্তিমূলক কথা নচিকেতার থেকেই শিখেছি। শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পণকালে হঠাৎ পরিবর্তন আসে, এই পরিবর্তন ও সাহসের ক্ষেত্রে আমার জীবনে নচিকেতা গুরুত্বপূর্ণ।
ঠিক যে সময়ে জীবনে চার্জারের গুরুত্ব বাড়লো, কিছুটা ছাড়া পেলাম তখন পছন্দগুলো কেমন যেন বদলে গেলো হঠাৎই। ঢেউয়ের কাছে মানুষ বরাবরই ধাক্কা খায়। একটা খাঁচা থেকে সদ্য বেরোনো পাখি হঠাৎই স্বপ্ন দেখতে শেখে, ঘুরে দাঁড়াতে শেখে, লড়াই করতে শেখে।
একদিন এক বন্ধু আমাকে ‘আরও একবার’ শোনায়। বাড়ি এসে সেই গান আমি সেদিন রাতে বত্রিশ বার শুনেছিলাম। প্রত্যেকটা শব্দ যেন এক একটা ছবি। সে রাতে আমি একটা গল্প দেখেছিলাম গানটার সাথে। ইলেভেনে পিওর সায়েন্সের ভারে নুয়ে পড়া মাথায় কেবল ‘ দেখো মানসী’, ‘আরও একবার’ কিমবার ‘তিলোত্তমা ঘুরতো। ডিপ্রেশনের চরমে, সুখ পেয়েছি ‘এই একলা ঘর আমার দেশ’ গেয়ে। রূপম ইসলামকে আমি এই সময় থেকে আমার সাথে পেয়েছি।
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে এমনভাবে কেউ না কেউ গুরুত্বপূর্ণ থেকে যায় আজীবন, যাদের মানুষ ভুলতে পারে না… কেবল স্মৃতি রোমন্থন করে বুকটা ভারী করতে পারে। নচিকেতা ও রূপমের থেকে আমি ঘুরে দাঁড়ানোর সাহসটা পেয়েছি। আরও পেয়েছি একটা অসাধারণ স্মৃতির ভান্ডার।
নচিকেতা থেকে রূপমের জার্নিটা আমার কাছে একটা ক্লান্ত রাতের মধখোলা হাসির মতো। যা আজীবন আমি রেখে দিতে চাই।