ডিসেম্বর মাস পড়েছে। গুটি গুটি পায়ে শীতও প্রবেশ করেছে… সাথে বয়ে এনেছে বড়দিনের আমেজ। আর বড়দিন মানেই ইয়াম্মি কেক ও ক্যারলের সুর।
“জিঙ্গল বেল, জিঙ্গল বেল, জিঙ্গল অল দ্য ওয়ে…”
একটা বছর অসীম প্রতীক্ষায় কাটে দিন…
সান্তা দাদু আসবে, আর আমাদের টাঙিয়ে রাখা ফাঁকা মোজাটা পূর্ণ করে দেবে হরেক রকম উপহারে। এ যেন জীবনের শূন্য স্থান পূর্ণ করার এক অদম্য বাসনা সকলের মনে।
বড়দিনের আগের রাতে ক্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়ে সাদা মোজা ঝুলিয়ে রেখে প্রতীক্ষায় কাটে রাত। প্রতীক্ষা, কখন সান্তা ক্লজ় এসে নিজের বড় ঝোলা থেকে মনের মতো উপহারটা রেখে যাবে। এই কল্পনাতেই একসময় ঘুমিয়ে পড়ে মানুষ… সকাল বেলা ঘুম ঘুম চোখে উপহার প্রাপ্তির আনন্দ।
বড়দিন শুধু উপহারের দিন নয়, নতুন নতুন গুচ্ছ প্রতিশ্রুতির দিন, স্বপ্নের দিন, আশার দিন… নতুন বছরে নতুন সম্ভাবনার দিন।
আর বড়দিন মানেই কেক আর ক্যারলের সুরে মেতে ওঠা। গোটা পৃথিবীর সাথে ভারতও মেতে ওঠে এই কেক ক্যারলের উৎসবে। সব সমস্যা দূরে সরিয়ে রেখে আনন্দে বুঁদ হয়ে ওঠে।
বড়দিনে কলকাতার সাজ
বড়দিনের কলকাতা যেন আলো আর তারায় তারায় খচিত আকাশ। পার্কস্ট্রিট সেজে ওঠে যেন রানীর বেশে। সেন্ট পল ক্যাথিড্রাল থেকে বোব্যারাক সর্বত্রই আনন্দের হিড়িক।
বেলুর মঠেও বড়দিনের সন্ধ্যায় আরতির পর শুরু হয় যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মন্দিরে প্রভু যীশুর ছবি বসানো হয়। মোমবাতি, ফুল দিয়ে ছবি সাজানো হয়। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি ও মিষ্টি। ক্যারলের মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়।
ইংরেজি ও বাংলায় বাইবেল পাঠ করা হয়
আর কেক… ঘরে ঘরে কেক, থরে থরে কেক। চারিদিক যেন ম ম করে কেকের মিষ্টি গন্ধে, সান্তা ক্লজ় এর উপহারের আনন্দে আর ক্যারলের ছন্দে।
বড়দিন কী?
২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, আসলে যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন। এই দিনটিই সবার কাছে বড়দিন বলেই পরিচিত। খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্টের জন্ম হয় অলৌকিকভাবে।
খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস মতে, এই দিনেই যিশু খ্রিষ্ট পৃথিবীতে মানুষের রূপ ধরে জন্মগ্রহণ করেন এই পৃথিবীর সকল পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, মানুষে মানুষে বন্ধনকে আরও সুসংহত করতে।
তবে বড়দিন এখন শুধু মাত্র আর খ্রিষ্টানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সব ধর্মের বর্ণের মানুষের কাছে এর একটা আলাদা আবেদন ক্রমে তৈরি হচ্ছে।
এক ঝুড়ি সম্ভাবনা নিয়ে আসছে বড়দিন। আসছে কেকের গন্ধে… ক্যারলের ছন্দে।