ক্রমশ আমরা এমন এক সময়ে এসে পৌঁছেছি, যখন মানুষের ন্যুনতম প্রয়োজন পূরণ করার জন্যেও দরকার অর্থের। আর সমাজে ভিখারি বলে সবাই যাঁদের চেনে তাঁরা মানুষের কাছে চেয়েচিন্তে কোনমতে দিন গুজরান করেন। রাস্তাঘাটে, বড়ো বড়ো মন্দিরে, স্টেশনে, এমন অনেক মানুষ আমাদের চোখে পড়ে যারা সবার কাছ থেকে সাহায্য প্রার্থনা করেন, কেউ কেউ এঁদের সাহায্য করেন খুচরো টাকাপয়সা দিয়ে।

সবাই এই তথ্য সম্পর্কে কম বেশি ওয়াকিবহাল যে এই সব মানুষের আর্থিক কোনও সঙ্গতিই প্রায় নেই। কিন্তু এই খবরটা জানেন কি যে পৃথিবীতে এমন বহু ভিখারি রয়েছে যাঁদের মোট সম্পত্তির মুল্য কয়েক লাখ বা এমনকি কয়েক কোটি টাকারও বেশি? তাছাড়া এমনকি ভারতবর্ষের একাধিক মানুষ রয়েছে যারা পথেঘাটে ভিক্ষা করে বেড়ান অথচ সম্পত্তির নিরিখে এঁরা বহু লাখ টাকার মালিক। অবাক লাগছে নিশ্চয়ই তথ্যটা জেনে?! কিন্তু এই সত্যি আমাদের অনেকেরই জানা নেই। জেনে নিই এদের মধ্যে কয়েকজনের কথা-

ধনী ভিখারিও আছে এই সমাজে!!!!

https://www.financialexpress.com/india-news/mumbai-beggar-was-a-millionaire-police-find-after-his-death/1729130/

ভরত জৈন—– মুম্বাইয়ের এই ভিখারির সম্পত্তির মোট পরিমাণ আজ প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি। দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক এই মানুষটির পেশায় ভিখারি। একটি জুসের ব্যবসাও রয়েছে এঁর। এবং শোনা যায় নতুন ভিখারিদের ট্রেনিং দেবার কাজেও নিজেকে ব্যস্ত রাখেন ভরত জৈন। এঁর দুই ছেলে মুম্বাইয়ের অভিজাত স্কুলের ছাত্র।

টেড উইলিয়ামস—– আমেরিকার বিখ্যাত ভিখারি টেড উইলিয়ামস আজ সম্ভবত পৃথিবীর সবচাইতে ধনী ভিখারি। গান গেয়ে একসময় আমেরিকার ওহাইওর রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়াতেন দরিদ্র এই মানুষটি। ইউটিউবের মাধ্যমে তাঁর কথা পৌঁছে যায় পৃথিবীর নানান প্রান্তে। আজ তাই টেড একজন মিলিয়নেয়ার।

সাইমন রাইট—- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আজব ভিখারিকে ব্যান করা হয়েছিল ভিক্ষাবৃত্তি থেকে। সাইমন রাইট ইউরোপের নানান দেশে নিজের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য একই সঙ্গে বিখ্যাত এবং কুখ্যাত। বহুবার আদালতের আদেশ অমান্য করে নানান স্থানে ভিক্ষা করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে এঁকে। অথচ জামিনে ছাড়া পাবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইনি আবার দাঁড়িয়ে পড়েন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। শোনা যায় ভিক্ষা করেই বছরে প্রায় পঞ্চাশহাজার পাউন্ড রোজগার করেন এই ভিখারি।

সাম্ভাজি কালে—– মুম্বাইয়ের এই ভিখারি ভিক্ষা করেন সপরিবারে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় হাজার দুই টাকার কাছাকাছি পরিবারের একেকজন আয় করেন। লক্ষপতি এই ভিখারি আজ কয়েকটি ফ্ল্যাট, কিছু জমি এবং একটি বড়সড় বাড়ির মালিক। ইনিও অঞ্চলের নতুন ভিখারিদের মাথার উপর বসে থাকেন বলে জানা যায়।

beggars demonetise one rupee coin in up 1515478218
indiatimes.com

পাপ্পু কুমার—- পাটনার কিছু অঞ্চলে ভিক্ষা করেন পাপ্পু কুমার। সূত্র অনুযায়ী প্রায় দেড় কোটি টাকার মালিক এই আজব ভিখারি। মূলত ট্রেনেই দেখা যায় এঁকে। লক্ষপতি এই ভিখারি নাকি ব্যবসায়ীদের টাকা ধার দেন নিয়মিত।

আইশা—- সৌদি আরবের একশ বছর বয়সী এই মহিলা জীবনের শেষ পঞ্চাশ বছর কাটিয়েছিলেন ভিক্ষা করেই। আইশা ছিলেন অন্ধ এবং মারা যান ২০১৪তে নিজের ছোট্ট ঠিকানায়। মারা যাবার পর তাঁর জড়ো করা অর্থের পরিমাণ দেখে সেই অঞ্চলের মানুষের চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল। কয়েক লক্ষ টাকার বেশি এই মহিলা রেখে গিয়েছিলেন দুঃস্থদের সাহায্যের জন্য।

ভিখারি
international mission project

হে রঙফেঙ—– চিনের এই ভিখারির কীর্তিকলাপে মনুষ্যত্বের প্রতি বিশ্বাস ফিরে আসে আজ। ভিক্ষা করতে একদিন এক নুডলের দোকানের মালিকের কাছ থেকে সহৃদয় ব্যবহার পেয়েছিলেন রঙফেঙ। শুধু তাই নয়, এই মানুষটির কাছ থেকেই কিছু টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পর রঙফেঙ্ কোটিপতি হন। অথচ সাহায্যকারী বন্ধুকে ভুলে যাননি তিনি। যে সাহায্য তিনি পেয়েছিলেন তার প্রতিটি পয়সা তিনি মিটিয়ে দেন পরবর্তীকালে।

ফলে বুঝতে পারা যাচ্ছে তো যে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করলেই যে দীনদরিদ্র অবস্থা হবে বলে চিরাচরিত এক ধারণা আমাদের সবার রয়েছে, তা বদলাবার সময় হয়ে এসেছে এবার। আপনারা কী বলেন?!

আরও পড়ুন

https://banglakhabor.in/2020/11/12/%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%96%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a4-5-%e0%a6%9c%e0%a6%a8-first-lady/