গুটিগুটি পায়ে শীতকাল চলেই এল।শীতের ছোঁয়াতেই সর্বনাশ! ত্বকের রুক্ষ আর অমসৃণ ভাব আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে তো? এই নিষ্প্রাণ শুষ্ক ত্বকে কি করে তরতাজা প্রাণ ফিরিয়ে আনা যায়, সেকথাই ভাবছেন? ঠোঁটের দু’পাশের অংশে শুষ্কতার জন্য এর মধ্যেই কালচে ভাব আসতে আরম্ভ করেছে? এত সমস্যার সমাধানের চাবিকাঠি ও কিন্তু আপনার হাতেই রয়েছে। ত্বকের পিএইচ এর ভারসাম্য কোনো কারণে নষ্ট হলে, তবেই ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা শুরু হয়ে যায়।
প্রথমত, আভ্যন্তরীণ উপায়ে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে না পারলে কিন্তু ত্বকে নিষ্প্রাণ ভাব আসবেই। রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখুন সাদা তিল, আমন্ড, খাঁটি মধু, তিসি, কুমড়োর বীজ, আখরোট ইত্যাদি। এই খাদ্যগুলি ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, জিংক, লিনোলেনিক এসিড, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর – যা আপনার শরীরে অত্যাবশ্যকীয় মিনারেল এবং ভিটামিনের ঘাটতি সম্পূর্ণরূপে পূরণ করে। ফলে, আপনার ত্বক হয়ে ওঠে লাবণ্যময় এবং মসৃণ।এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনি নিয়মিত ফিশ অয়েল ক্যাপসুল খেতে পারেন। সারা দিনে অন্তত তিন লিটার জল পান করুন।

শীতের শুরু থেকেই যাদের ত্বক অতিরিক্ত রুক্ষ এবং শুষ্ক, তারা জোজোবা তেল অথবা আরগান তেল এর সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করুন। অনেক রকম টোটকা এবং হাজার রকম প্রোডাক্ট ব্যবহারের পরেও যদি ত্বকের বিবর্ণ ভাব আপনার পিছু না ছাড়ে, সেক্ষেত্রে ব্যবহার করুন নিয়াসিনামাইড, সেরামাইড এবং ভিটামিন ই যুক্ত সিরাম। আপনার ত্বক হয়ে উঠবে নিখুঁত, উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত। এরপর আসি তাদের কথায়, যাদের ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল, সারা বছর ফুসকুড়ি ব্রণের সমস্যা লেগেই থাকে, অথচ শুষ্কতা করে তোলে আরও নিষ্প্রাণ। এরা সাধারণত সারা বছরই ত্বকের এলার্জি সমস্যাতেও ভোগেন। শীতকালে আরো বেড়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের ক্রিম আর ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করলে এই রকম ত্বকে আরও বহুবিধ সমস্যা আসতেই থাকে। মাচা গ্রীন টি আর মধু দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করতে পারলে অচিরেই এর সুফল আপনি পাবেন। এমন ক্রিম বা সিরাম বেছে নিন, যাতে রয়েছে কমলালেবু, ভিটামিন ই, গ্রিন টি। এতে আপনার ত্বকের রুক্ষতা তো দূর হবেই এছাড়াও স্পর্শকাতরতা অনেক কমবে। সমস্যাবহুল ত্বকের ক্ষেত্রে কোল্ড প্রেসড গ্রেপ সিড অয়েল ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যার নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ হয় এবং কালচে ভাব সম্পূর্ণভাবে দূর হয়ে যায়। অ্যালকোহলযুক্ত ফেসওয়াশ একেবারেই বর্জন করুন। ভিটামিন- ই, জোজোবা, পদ্মফুল, শসা- এই উপাদান গুলি আজকাল বহু ভালো ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ এ থাকে; যা নিঃসন্দেহে অতিসংবেদনশীল ত্বকের জন্য আদর্শ।

সত্যি বলতে কি, ত্বকচর্চার কোনো বিশেষ জাদুমন্ত্র হয়না। সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ত্বকের যত্নে প্রচন্ড শীতেও ত্বক সুন্দর, নিখুঁত এবং লাবণ্যময় থাকবেই।