বিশ্বজুড়ে এখন মহামারির ত্রাহি ত্রাহি রব। এই রবের নিষ্পত্তি যে কবে ঘটবে তা সকলেরই অজানা।   করোনার ফলে মানুষ আজ গৃহবন্ধী। কেউ আবার নিউ নর্মালকে আপন করে নিচ্ছে কিন্তু নর্মাল হতে কেউই পাচ্ছেনা। করোনার ত্রাস মানুষকে গিলে খাচ্ছে।  কত কাজ আজ বাঁধা পড়েছে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে। পুরনো জীবনে কবে পা দেবে সকলের অজানা । সেই পুরনো সুর্য আজ নতুন করে উদয় হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার মধ্যে সেই আগের মতো ভোরের মিঠে আলোর কমতি।  তাই মানুশ প্রহর গুনছে করোনার বিদায়বেলার। করোনার বিদায় হলে মানুষ প্রান খুলে বাঁচবে । করোনর হাহাকার স্তব্ধ হলে মানুষ সবার আগে   কি কি করবে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

করোনার প্রভাবে ফেলে আসা যে সকল কাজ মানুষ সর্বপ্রথমে করতে আগ্রহী হবে

বদ্ধতার বেড়াজাল কাটিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস

করোনা বিদায়বেলায় মানুষ  কিছু করুক চাই না করুক মুক্ত পরিবেশে গিয়ে মুক্ত বাতাসের স্বাদ গ্রহন করবে।  দির্ঘ্যকালীন এই বন্দীদশায় মানুষের প্রান প্রায় ওষ্ঠাগত হওয়ার জো। মুক্ত বাতাস আজ সকলের কাছে মৃত্যুফাঁদ। কারন বাতাসে সেই মুক্ততা নেই , ভাইরাস বাতাসের মুক্ততা ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই করোনা মুক্ত হলে মানুষ সমস্ত বন্দীদশা কাটিয়ে মুক্ত বাতাসকে তার শরীরে মননে ধারন করবে। মাস্ককে খোলা আকাশে উড়িয়ে দিয়ে নির্ভয়ে শ্বাস নেবে ।

home quarantine
প্রতীকি চিত্র

 

ওয়ার্ক ফ্রম হোম ছেড়ে ওয়ার্ক ফ্রম অফিসের উন্মাদনায় মাতবে

করোনার দাপটে সকলেই জুজু । তাই প্রানের মায়া করে এখন কর্মক্ষেত্রের বর্তমান পরিস্থিতি ওয়র্ক ফোর  হোম।  বিষয়টি  যতটা সহজ শোনায় ততটা ঠিক নয়।  বাড়ি ও অফিস আলাদা আলাদাই ভালো, একসাথে আমে দুধে মিশে গেলে অনেকটা নিজেকে আঁটির মতো লাগে। প্রবল পরিমান চাপের সৃষ্টি হয়। আর অফিসের মজাই আলাদা। কাজের সাথে সাথে থাকে মজা, ভালো লাগা, শেখার চাহিদা, কিন্তু বাড়ি বসে কাজের দ্বারা এই সকল বিষয়ের উপভোগ সম্ভব নয়।  তাই কতদিন পাখি খাঁচায় আবদ্ধ থাকবে। করোনা মুক্ত হলে পাখি ডনা মেলে উড়বে ।  ওয়র্ক ফোর  হোমে ছেড়ে ওয়ার্ক ফোর অফিসে মত্ত হবে।

working from home 580x336 1
ছবি সৌজন্যে insurance journal

দূরত্বকালীন জীবনযাপনের অবসান ঘটবে

করোনা মানুষকে দূরে করেছে দিয়েছে, আতিথিয়তা, গেট টু গ্যাদার, সোশ্যাল গ্যাদারিং সব কিছুই সোশ্যাল ডিস্টেন্সের বেড়াজালে আটকে গেছে। এই সব কিছু এখন যেন অতীত বলে মনে হয়।  না বিপদের সময় কেউ কারোর কাছে ছুটে যাতে পারবে, না কোন প্রিয় জনকে কাছে টানতে পারবে, না তো পড়বে ভরসার হাত কাঁধে রাখতে। না পারবে কোন আনন্দ মুহূর্তকে ভাগ করে নিতে। সব ভালো কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অসুররূপী করোনা। তাই করোনা বধ হলে সকলে আগের জীবনে ফিরবে। মানুষ মানুষের বাড়ি যাবে, গে টু গ্যাদার হবে, একে ওপরের সুখ দুখের ভাগী হতে পারবে, সেই আগের ভরসাযোগ্য হাত কাঁধের উপর পাবে।

download 1 4
ছবি সৌজন্যে Munson Healthcare

নির্ধিদায় শপিং এ মতি

মেয়েদের কাছে শপিং একটি বিশেষ ভালোলাগার বিষয়। শুধু মেয়ে বললে ভুল হবে এখনকার দিন ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে শপিং করতে বেজায় ভালবাসে। কিন্তু এই শপিং এ বাঁধ সেজেছে করোনা ভাইরাস। শপিং মল করোনার আতুর ঘর, গোষ্ঠী সংক্রমনের মুখ্য স্থান । কিন্তু করোনার বেড়ী পা থেকে খুলে গেলে একপ্রকার হামলে পড়বে সবাই শপিং মলে। নির্দিধায় তারা শপিং করতে পারবে সাথে পেটপুজোরও আয়োজন করবে। কারন শপিং এ গেলে পেটপুজো ইস মেন্ডেটারি।   

download 7
প্রতীকি ছবি

ভ্যাকেশনাল ট্রিপে র পরিকল্পনা

ছুটি পেলেই ছোট একটা ট্যুর এরেঞ্জ করে ফেলা সে ২ দিন হোক কিংবা ৭ দিন সেটা কোন বিষয় নেই। কর্মব্যাস্ত জীবন থেকে ফাঁক পেলেই সপরিবারে হোক কিংবা বন্ধুবান্ধবদের সাথে ভ্যাকেশন ট্রিপে যাওয়া খুবই নররমাল বিষয় ছিল। কিন্তু এই নিউ নর্মাল জীবনে মানুষ খুব একটা সাহস করে উটতে পারছে না কোন দীর্ঘ্মেয়াদী ভ্যাকেশনের । ভ্যাকেশন ট্রিপ তো দুরহস্ত একটা নর্মাল ডে আউটে যেতে গেলে মানুষ কমপক্ষে ১০০০০ বার ভাবছে, অনেকে তো ভাবতে ভাবতেই দিনটাই কাটিয়ে দিচ্ছে বেরনো হচ্ছে না। তাই করোনা পাকাপাকি ভাবে বিদায় জানালে  সবাই লং ট্রিপে হোক কিংবা ডে আউটে  অবশ্যই যাবে। আর প্রান খুলে আনন্দ করবে। ফিরে যাবে আগের সেই নর্মাল জীবনে নিউ নর্মালে  নয়।

Vacation and travel a huge pile of things for the holiday
ছবি সৌজন্যে Munson Healthcare

তবে আমার মনে কিছু  প্রশ্ন ভিড় করে আসছে ।  আচ্ছা  করোনা গেলে এগুলি সত্যি হবে তো। নাকি মানুষ যেহেতু অভ্যাসের দাস, তারা এই অভ্যাসকে চিরকালের সঙ্গী নেবে না তো? দাঁড়াবে তো মানুষ বিপদকালে একে ওপরের পাশে নাকি বর্তমান দিনের মতো কাউকে পড়ে থাকতে দেখলেও পাশ কাটিয়ে চলে যাবে ?  আপনাদের মনেও কি একই প্রশ্নের ভান্ডার জমেছে ? আপনাদের কি মনে হয় সত্যি কি তাই হবে নাকি আগের  প্রাণোচ্ছল জীবন ফিরে পেতে মানুষের মতি হবে?

যদি করোনা চলে যায় তাহলে আপনি কি এমন জিনিষ সবার প্রথমে করবেন তা আমাদের সাথে ভাগ করে নিন। কমেন্ট করে লিখে জানান । আপনার কি প্ল্যান আছে করোনার বিদায়বেলায়।