** রবিবার ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জেতার পর নোভাক নিজেকে *’সেরা খেলোয়াড়’* হিসাবে গণ্য করেন যদিও তিনি নিজেকে *’সর্বকালীন সেরা’* মনে করেন না।ছ’নম্বর উইম্বলডন ট্রফি প্রাপ্তির পর ৩৪ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় সর্বাধিক মোট ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড করে রজার ফেডেরার ও রাফায়েল নাদালের সমকক্ষ হয়ে উঠেছেন তা বলাই বাহুল্য।তিনি ইতালির মাত্তেয়ো বেরেত্তিনিকে ফাইনালে ৬-৭(৪/৫),৬-৪,৬-৪,৬-৩ রেজাল্টে হারান।এরপর তিনি যদি সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জেতেন তাহলে একই মরশুমে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম অর্থাৎ *ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম* জিতলে ১৯৬৯ সালের রড লেভারের পর তিনিই প্রথম ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে সক্ষম হবেন।এ প্রসঙ্গে জোকোভিচ বলেন,”আমি নিজেকে সেরা মনে করি এবং আমি বিশ্বাস করি যে, আমিই সেরা,যদিও আমি স্ল্যাম জেতা এবং ইতিহাস তৈরির মানসিকতা নিয়ে এই আত্মবিশ্বাসের কথা বলছিনা।আমি সর্বকালীন সেরা না সেরা নয় সেই তর্ক অন্যদের।আমি আগেই বলেছি যে,টেনিসের যুগের মধ্যে তুলনা করা খুব কঠিন।এখন আমাদের কাছে অন্যরকম র্যাকেট,টেকনোলজি, বল,কোর্ট আছে।এখনকার অবস্থা আর পঞ্চাশ বছর আগেকার অবস্থা অনেক আলাদা।তাই, তুলনাও কঠিন।”
তিনি এ নিয়ে আলোচনা করতে না চাইলেও জোকোভিচ জানেন যে,সময় তাঁর সঙ্গেই রয়েছে।কারণ, নাদালের চেয়ে একবছরের ছোটো হয়েও এবং প্রায় চল্লিশ বছর বয়সী ফেডেরারের সমকক্ষ হয়ে ওঠা নেহাৎ মুখের কথা নয়। গতমাসেই নাদাল উইম্বলডনে জোকোভিচের কাছে ফ্রেঞ্চ ওপেন সেমি ফাইনালে হেরে যায়।অন্যদিকে, অল ইংল্যান্ড ক্লাবের খেলায় ফেডেরার কোয়ার্টার ফাইনালে প্রস্থান করে।জোকোভিচ, তাঁর ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে ৮টিই তাঁর ত্রিশ বছর অতিক্রম করার পর পেয়েছেন।এমনকি তিনি যে শেষ আটটি ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছিলেন তার মধ্যে সাতটিই জিতেছেন শুধু গত বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেনে নাদালের কাছে ছাড়া।
*গোরান ইভানসেভিক* যিনি ২০০১ সালের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন এবং বর্তমানে জোকোভিচের কোচদের মধ্যে অন্যতম,রবিবারে তিনি জানিয়েছেন,”কে সেরা তা নিয়ে কোনো তর্ক নেই।আমার জন্য নোভাকই সেরা।সে ইতিহাস লিখছে।সে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের ওপেন জিতবে বলে আমার বিশ্বাস।সে মরশুমের চারটি ট্রফিই জিতবে।তখন এই তর্ক শেষ হবে বলে আমি মনে করি।আমার জন্য এই তিন তারকা এবং ৬০টি গ্র্যান্ডস্ল্যামের তর্ক বহুদিন আগেই শেষ হয়েছে।আজ আমি জোকোভিচের কোচ বলে নয়,অনেকদিন আগে থেকেই জোকোভিচ আমার জন্য বেস্ট।নোভাক আরও জিততে চায়।সে আমার কাছে সবথেকে বড়ো তারকা।এ বিষয়ে আমার কোনো তর্ক করার দরকার নেই।”একটা সময় ছিল যখন পেতে স্যাম্প্রসের ১৪টি খেতাবকে কেউ ভাঙতে সক্ষম হবেনা মনে করা হত।কিন্তু ফেডেরার ২০০৯ সালে ১৫টি উইম্বলডন ফাইনাল জিতলেন এবং ২০১৮তে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জিতে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন।জোকোভিচ সেই সময় ১২টি স্ল্যাম জিতেছিলেন।মাত্র কদিনেই তিনি ফেডেরারের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন।
তাঁর এই জয়ের পর এই সার্বিয়ান কিংবদন্তি খেলোয়াড় সারা বিশ্ব থেকে প্রশংসা কুড়োচ্ছেন।বিভিন্ন খেলার তাঁর সমকালীন বা তাঁর পূর্বকালীন খেলোয়াড়রা তাঁকে টুইটারে অভিবাদন জানিয়েছেন। রোজার ফেডেরার,রড লেভার এবং সিমোনা হালেপ থেকে শুরু করে শচীন টেন্ডুলকার অব্দি অন্যান্য কিংবদন্তি রা তাঁকে সম্মান এবং ভালোবাসা জানিয়েছেন।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,তাঁর খেলা দেখার জন্য ভারতের জাতীয় ক্রিকেট কোচ রবি শাস্ত্রী আগেভাগেই হাজির হয়েছিলেন।ইংল্যান্ডে আসন্ন সিরিজের জন্য কোচ রবি শাস্ত্রী এবং ভারতীয় টিম ইংল্যান্ডেই অবস্থান করছে।জোকোভিচ তাঁর ক্যারিয়ারে মোট ৮৫টি খেতাব পেয়েছেন।এছাড়া সব মিলিয়ে,তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ন’টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন,ছ’টি উইম্বলডন এবং তিনটি যুক্তরাষ্ট্র ওপেন খেতাব।বলা বাহুল্য, এতগুলি খেতাব রজার এবং রাফারও নেই।সব মিলিয়ে বলা যায় জোকোভিচের এই অসাধারণ কৃতিত্বের কারণ তাঁর জেতার ধারাবাহিকতা ও উদ্যম,যেটি তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় রেকর্ড এনে দিতে পারবে বলেই সকলের বিশ্বাস।