নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোট। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, উত্তর ২৪ পরগনা ও বর্ধমানের কিছু অংশ এবং নদীয়ায় সকাল থেকেই চলছে ভোটগ্রহণ পর্ব। তেমনই ভোট চলতে থাকা একটি গ্রাম হাতিঘিষা। শিলিগুড়ি থেকে বাসে চেপে প্রায় ২০ কিলোমিটার গেলে হাতিঘিষা স্টপেজ। পিচঢালা রাস্তা থেকে নেমে গ্রামের রাস্তা ধরে কিছুটা এগোলেই সেবদেল্লা জোত। আর এখানেই বাড়ি নকশাল নেতা প্রয়াত কানু সান্যালের। আজ প্রায় ১১ বছর হল তিনি নেই। ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। সেই বাড়ি আজও রয়েছে। যৎসামান্য জিনিসপত্রও রয়েছে। গ্রামের মানুষ আজও বুক দিয়ে আগলে রাখেন মাটির দাওয়া, টিনের চালের ছোট্ট বাড়িটাকে। সংগঠনের কার্যালয় হিসাবেই পরিচিত এই বাড়ি।
উল্লেখ্য, কানু সান্যালের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা হওয়ার কথা হয়েছিল এখানে। সেই কাজও অনেকটাই বাকি থেকে গিয়েছে। গেরিলা বাহিনী, কৃষক আন্দোলন সবই কার্যত আজ অতীত। বেঙ্গাইয়াজোত, প্রসাদুজোত, মেচি বস্তিতে আজ সকাল থেকেই ভোট চলছে। মাটিগাড়া নকশালবাড়ি কেন্দ্রের আওতায় এই গ্রাম। পাশেই ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্র। ভোট সেখানেও। ফাঁসিদেওয়া কেন্দ্রে সিপিআইএমএল (লিবারেশন) প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু নকলাশবাড়িতে কোনও প্রার্থী নেই তাদের। কেন নেই? এই প্রশ্নও উঠেছে ভোটপর্বে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, অতি বাম আন্দোলনের এই আঁতুরঘরে এখন নাকি আরএসএসের প্রবল শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে। বছর কয়েক আগে এই নকশালবাড়িতে এসেই পাত পেরে খেয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। ২০১৪ সালে হাতিঘিষাতে গিয়ে আদর্শ গ্রাম হিসাবে গড়ে তোলার জন্য দত্তক নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া। কথা ছিল ডিজিটাল গ্রাম হবে এখানে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সেই স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে। ঠিক যেভাবে দিন বদলের স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে অনেকের কাছে। চারদিকে এখন শুধুই অনুন্নয়ন। এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও তুঙ্গে।
একদিকে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্যই অনেক কিছু করা যায়নি। অন্যদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা ভাঁওতাবাজির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর সেই দিন বদলের স্বপ্ন, সেই সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখা অপর নকশাল নেতা প্রয়াত চারু মজুমদারের পুত্র তথা সিপিআইএমএল (লিবারেশন) দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার বলেন, এখন তো ওখানে কৃষিই পেছনের সারিতে চলে গিয়েছে। তবে শ্রমিকের স্বার্থে আন্দোলন জারি রয়েছে। ওই সমস্ত এলাকায় এখন আরএসএসের কিছুটা দাপট রয়েছে। আদর্শ গ্রামও হয়নি।