নিজস্ব সংবাদদাতা: এই মাত্র দু’দিন আগের ঘটনা। আগামী ১ তারিখ নন্দীগ্রামে নির্বাচন। সেই ভোটেই সাহায্য চাইতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনৈক বিজেপি কর্মী প্রলয় পালকে ফোন করেছিলেন৷ বিজেপির তরফে সেই কথোপকথনের অডিও প্রকাশ করা হয়৷ ভাইরাল ওই কথোপকথন এখন গোটা দেশেই চর্চার বিষয়৷ যদিও ওই কণ্ঠস্বর মুখ্যমন্ত্রীর কি না তা এখনও প্রমান সাপেক্ষ৷ যার সত্যতা যাচাই করেনি কোনো সংবাদমাধ্যমই৷
তবে তৃণমূল নেতারা শুরু থেকে ওই কণ্ঠস্বর দলের সুপ্রিমোর বলে মেনে নিতে অস্বীকার করলেও পরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো বর্ষীয়ান নেতা জানান, মমতা যা করেছেন ঠিকই করেছেন। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ওই কন্ঠস্বর মমতারই। ঘটনার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল সমর্থকরাও আত্মপক্ষ সমর্থনের দিক খুঁজছে৷ কেউ কেউ ভাঙা হৃদয় নিয়েও বলছেন, মমতা যা করেছেন ঠিক করেছেন৷
কিন্তু রাজনীতিতে ‘নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট’ অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। মনে করা হচ্ছে, এই ঘটনা তৃণমূলের ভোটমুখী রাজনীতিতে ভয়ঙ্কর ‘নেগেটিভ’ প্রভাব ফেলবে! প্রধান কারণ, ওই বক্তব্যের ‘কনটেন্ট’। যা তৃণমূল কংগ্রেসের নীচুস্তরের কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের। সেই অডিওটি প্রকাশ করে বিজেপির দাবি, মমতা স্থানীয় নেতাকে ফোন করে জানিয়েছেন, “তোমাদের লোকাল লিডার আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দিত না। সে আমাকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে দিত না। সারা মেদিনীপুরে ঢুকতে দিত না। তাদের একটা জমিদারি চলত।” বিজেপি বিরোধিতা করতে গিয়ে কি দলকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী? নাকি এও অভিজ্ঞতার নিরিখে তাঁর কোনো রাজনৈতিক কৌশল? প্রশ্ন উঠেছে কৌতূহলী মহলে।
ওই কন্ঠস্বর মমতার, নাকি তার নয়- সেই বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রযোজন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷ যদিও, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথা যদিও স্বীকৃতি দিয়েছে যে ওই কণ্ঠস্বর মুখ্যমন্ত্রীরই। সেই ক্ষেত্রে সাধারণ জনতা মমতার কথায় চরম দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছে। যে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেত্রীর কথায় একসময় রাজ্যে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেতো, সাধারণ বিজেপি জেলা সহ সভাপতির কাছে তাঁর এই সাহায্য প্রার্থনা সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের আত্মবিশ্বাস ভাঙতে যথেষ্ট, অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, চলতি বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের দিকেই নজর সারা দেশের। কারণ, নিজের এতদিনের সঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন মমতা। এদিকে, গতকাল বিকেলে নন্দীগ্রামে গুলি কাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন মমতা। বলেছেন, সেদিন গুলি চালানোর ঘটনায় বাপ-ব্যাটা দুই অধিকারীই মূল দোষী। সেক্ষেত্রে তিনি যেই বুদ্ধ সরকারের মুণ্ডুপাত করেছিলেন একসময়, গতকাল তাঁদেরই কি ক্লিনচিট দিয়ে দিলেন? প্রশ্ন উঠছে বাংলাজুড়ে।