নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য জুড়ে বেজে গেছে ভোটের বাদ্যি। একদিকে যখন গত লোকসভা নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য সাফল্যকে হাতিয়ার করে মসনদ দখলের লড়াইতে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি, অন্যদিকে তখন ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূলও। তবে ঘাস আর পদ্মের এই লড়াই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দ্বিমুখী নয়। রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে কোমর বেঁধে নেমেছে জোট শক্তি। সংযুক্ত মোর্চার সমর্থনে এবার জোটের শরিক হয়েছে বামফ্রন্ট কংগ্রেস এবং আইএসএফ (Indian Secular Front)। ত্রিমুখী এই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসবে কে? তুমুল উন্মাদনার মাঝেই চলতি মাসে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন।
তৃণমূল হোক কিংবা বিজেপি, ভোটের আগে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই দুই শিবিরের অন্দরে দেখা গেছে অসন্তোষের ছায়া। আর তা দলের অন্দরেই চাপা থাকেনি, শহর-গঞ্জের পথে ঘাটে প্রকাশ্যে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।শীর্ষ নেতৃত্ব ঘোষিত প্রার্থীদের মানতে পারেনি নীচুতলার দলীয় কর্মীরা। ফলে প্রার্থী বদলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা।
এর পাশাপাশি যদি বাম শিবিরের প্রার্থী তালিকা এবং তার প্রতিক্রিয়ার দিকে চোখ রাখা যায়, দেখা যাবে একেবারে উল্টো ছবি। এবারের নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের প্রার্থীদের উপর আস্থা রেখেছে লাল নেতৃত্ব। সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত বামেদের প্রার্থী তালিকায় এবার তাই রয়েছে তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার এক অনন্য মিশেল। সিঙ্গুরে সৃজন ভট্টাচার্য, জামু্রিয়ায় ঐশী ঘোষ, বালিতে দীপ্সিতা ধর কিংবা নন্দীগ্রামে মীনাক্ষী মুখার্জী, তরুণ মুখের দিকে তাকিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে বাম কর্মী সমর্থকরা। মহম্মদ সেলিম কিংবা সুজন চক্রবর্তীরাও কিন্তু তারুণ্যের ভিড়ে ব্রাত্য নন। বরং তরুণ নেতা নেত্রীদের জন্যে দ্বিগুণ উৎসাহে প্রচারে নেমেছেন বয়স্করাও।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিদ্রোহের মূল কারণ তারকা অসন্তোষ। অর্থাৎ এক ঝাঁক টলিউড তারকাদের ভোটের টিকিট দেওয়া মেনে নিতে পারেননি দলীয় সমর্থকদের একাংশ। আর বিজেপি টিকিট দিয়েছে তৃণমূলত্যাগী নেতাদের। এযাবৎ বিরোধিতা করে আসা নেতাদের সমর্থনেই সুর চড়াতে নারাজ গেরুয়া কর্মীবৃন্দ। ফলত ফেটে পড়েছে বিক্ষোভ। তৃণমূল বিজেপির চাকচিক্যের ভিড়ে কতটা সাফল্য আনতে পারবে বামেরা, এখন সেটাই দেখার।