নিজস্ব সংবাদদাতা: অনুব্রত মণ্ডল সর্বপ্রথম রাজ্যের বিরোধী শিবিরগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এই স্লোগানটি ব্যবহার করেছিলেন। বলেছিলেন, “নির্বাচনে ভয়ঙ্কর খেলা হবে”। তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য আরও একধাপ এগিয়ে এই স্লোগানটি নিয়ে একটি গানও বেঁধে ফেলেছেন, যা ভোটের বাজারে রাতারাতি হিট হয়ে গিয়েছে জোড়াফুল শিবিরে। এরপর বাদ যায়নি বিজেপি বা সিপিএমও। তাঁরাও কমবেশি প্রত্যেকটি মিছিলেই বলেছেন, “খেলা হবে”। নবান্ন অভিযানের সময় বাম দলের ছাত্র-যুবরা ফুটবল নিয়ে এসে রাজ্য সরকারের সাথে খেলা করার বার্তাও দিয়ে গিয়েছেন। সবমিলিয়ে বাংলায় ভোটের আগে সুপার-ডুপার হিট শব্দবন্ধ “খেলা হবে”।
স্লোগান, ডিজে, মিটিং-মিছিল, এমনকি বিয়েবাড়িতেও বাজছে “খেলা হবে”! জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণ- সকলের মুখে মুখে এখন একটাই স্লোগান। এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও। আজ দক্ষিণ কলকাতায় ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ভোটের আঁচ বাড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির উদ্দেশ্যে হুঙ্কার দিয়ে বললেন, ‘‘এই একুশে একটাই খেলা হবে, আমি থাকব গোলরক্ষক। দেখি কে জেতে। ভোটের পর দেখা যাবে কে জেতে, কে হারে।‘’
উল্লেখ্য, এদিনই কয়লা পাচার কাণ্ডে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি এসে তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকাকে নোটিস দিয়ে গিয়েছে সিবিআই। সেই প্রসঙ্গ নিয়ে এদিন তিনি মুখ না খুললেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “জেলের ভয় আমাদের দেখাবেন না। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, আমারএ মাথা নত করব না। জেলে থাকলেও বঙ্গবন্ধুর মতো বিপ্লবের ডাক দেব।”
এদিকে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে ফের একবার রাজ্যের নামবদল প্রসঙ্গ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “রাজ্যের নাম বাংলা করতে চেয়েছিলাম। ৪ বছর হয়ে গেল আজও কেন্দ্র অনুমোদন দেয়নি। একবারও ভাবল না ভাষার নামের সাথে আমাদের রাজ্যের নামটাও জুড়ে আছে। বাংলাদেশ একটি দেশ, আর বাংলা তো শুধুই একটি রাজ্য।‘’
এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ জানিয়ে ফের একবার আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “চিরকাল বাংলার প্রতি বঞ্চনা, বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে কেন্দ্র। নেতাজি থেকে রবীন্দ্রনাথ, ওঁরা কাউকেই রেয়াত করেনি। বাংলা মানেই খুব খারাপ, সবসময় এমন একটা চিন্তাধারা রয়েছে তাঁদের মধ্যে। দিল্লীর নেতারা বলছেন বাংলার মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে চায়। কিন্তু আমি বলে যাচ্ছি, বাংলার মেরুদণ্ড এত সহজে কেউ ভাঙতে পারবেন না। বাংলাকে ভাঙতে এলে, আপনাদেরকে ছুড়ে ফেলে দেবে বঙ্গবাসী।”