নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বছর লকডাউনের মধ্যে শহরের গরিব, অসহায় মানুষগুলোর স্বার্থে সিপিআইএম চালু করেছিল ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’। সেখানে মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে মিলছিল পেট ভর্তি খাবার। সেই খাবারের পরিমাণ অথবা মান, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায়নি কাউকেই। বরং দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই ক্যান্টিনের সুখ্যাতি। আর এবার রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমজীবী ক্যান্টিনের আদলেই নিয়ে এল ‘মা কিচেন’। যেখানে থাকবে মাত্র পাঁচ টাকায় পেট ভরে খাওয়ার সুযোগ। গত সোমবার নিজের স্বপ্নের প্রকল্প ‘মা কিচেন’ উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে চালু হয়ে গিয়েছে।
চন্দননগর কর্পোরেশনে রবীন্দ্রভবনের জাহ্নবী নিবাসে এই মা কিচেনেই গতকাল খাবার খেলেন ৫০ জন সৌভাগ্যবান। কারণ, এই প্রকল্পের শুরু উপলক্ষ্যে দেওয়া হয়েছিল কুপন। কিন্তু সেখানেই ঘটল গণ্ডগোল! প্রকল্প শুরুর দ্বিতীয় দিনেই অভিযোগ, গোটা নয়, আধখানা ডিম বরাদ্দ হয়েছে খাওয়ার জন্য। যে প্রসঙ্গে চন্দননগর পৌরনিগমের কমিশনার স্বপন কুন্ডু জানান, “আমাদের একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আগামীকাল থেকে সকলে নির্ধারিত পুরো ডিমই পাবেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘মা কিচেন’ প্রকল্পে পেট ভরে ডাল-ভাত-সবজি ও ডিমের তরকারি খাওয়ানো হচ্ছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ ও দুঃস্থদের জন্য এই প্রকল্পটি চালু হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। কলকাতা-সহ রাজ্যের ২৭ টি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমের উদ্বোধন করেছেন এবং কী কী খাবার দেওয়া হবে সেটাও তিনি উল্লেখ করে বলেছেন।
একদিনের মধ্যেই পুরো রাজ্যে যে প্রকল্প ঘিরে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। যারা এই মা ক্যান্টিনে আসছেন যে খাবারটা তারা পাচ্ছে তারাও খুব আনন্দিত যে, এই সময়ে এত সস্তা দরে খাবার সত্যি অনস্বীকার্য। তারা যে খাবারটা পাচ্ছে খুবই সুস্বাদু এবং পেট ভরে তারা খাবার খেয়ে যাচ্ছে এবং তারা বলছে প্রত্যেকদিন এইভাবে খাবার দিলে তাদের মতো পিছিয়ে পড়া মানুষের আর কোন অসুবিধা থাকবে না। কিন্তু তাঁরা প্রশ্ন তুলছে, গতকাল তাঁদের পাতে আধখানা ডিম দেওয়া হয়েছে।
তবে বিরোধীরা এই প্রকল্পটিকে সমর্থন জানালেও, ভোট প্রচারের অঙ্গ বলেই কটাক্ষ করেছেন। রাজ্যের আগের বাম সরকার যেমন জানিয়েছে, “এই নতুন প্রকল্পটি অবশ্যই সমর্থনযোগ্য। কিন্তু সরকারের যেই সময় মানুষের পাশে সবথেকে বেশি দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল, তখন তাঁদের টিকিটিও পাওয়া যায়নি। কিন্তু ভোটের আগে এই কিচেন খুলে তারা প্রচার করতে চাইছে।” পাশাপাশি আধখানা ডিম দেওয়া নিয়েও সরকারকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা। বলছেন, যাঁরা খাচ্ছে, তাঁরা আধখানি পেয়েছেন আর বাদবাকি সরকারে খেয়ে নিয়েছে। ওরা ত্রাণের টাকা চুরি করে, চাল চুরি করে। ডিম চুরি করাও ওদের পক্ষে অসম্ভব নয়।