নিজস্ব সংবাদদাতা: এলাকায় ফুচকা বিক্রি করে কোনোক্রমে সংসার চলে তাঁর। দিন আনি দিন খাই-র সংসারে উপার্জন বলতে ফুচকা বিক্রি করে পাওয়া সামান্য অর্থই। তবে এতে আতিথেয়তায় কোনো খামতি নেই তাঁর। নিজের মেয়ের জন্মদিন পালনে অভিনব উদ্যোগ নিলেন এক ফুচকাবিক্রেতা। ফ্রিতে তাঁর সকল ক্রেতাকে দিলেন আটটি করে ফুচকা, পাশাপাশি দিলেন মাস্কও।

নিজের সামান্য অর্থ সামর্থ্যের মধ্যেও মেয়ের জন্মদিনের উৎসবকে অসামান্যভাবে পালন করলেন ফুচকাবিক্রেতা পীযূষ দাস। দেদার টাকাপয়সা খরচ করেও যেভাবে অগণিত মানুষের সাথে জন্মদিন পালনের কথা ভাবতে পারেন না প্রচুর বিত্তশালী মানুষ, তা নিজের মেয়ের জন্মদিনে করে দেখালেন বারাসাতের এই ফুচকা বিক্রেতা।

ফুচকা

শুক্রবার বারাসাতের পাইওনিয়ার পার্কে রাস্তার পাশে নিজের ভ্রাম্যমান ফুচকার স্টলে বসে অভিনব আঙ্গিকে মেয়ের জন্মদিনকে করে তুললেন জনগণের উৎসব। বারাসাতের মধ্য বালুড়িয়ার বাসিন্দা পীযূষ দাস তাঁদের একমাত্র শিশুকন্যা তিন বছরের অথৈ-য়ের জন্মদিনে প্রত্যেক ক্রেতাকে যে অন্তত বাড়তি আটটি ফুচকা খাওয়ালেন তাই নয়, সাথে উপহার দিলেন একটি করে মাস্কও।

অথৈ-য়ের জন্মদিনে দশটাকায় সেই বিশেষ দিনে ক্রেতাদের মিলল আঠেরোটি করে ফুচকা, যা অন্যদিনে দশটির বেশি মেলে না। সঙ্গে বিনামূল্যে মাস্ক বিলি করে মানবিক ও স্বাস্থ্য সচেতনতা মিশিয়ে দিলেন মেয়ের জন্মদিনের উৎসবে। ফুচকার দোকানে সামনে রাস্তার পাশে এদিন ফুচকার লাইন ক্রমেই দীর্ঘতর হয়ে চলল দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই।

বিগত দুবছরে আর একটু ছোট বহরে, কম উপহারে মেয়ের জন্মদিন পালন করেছিলেন এভাবেই। এবার বেশি ফুচকা নিয়ে বসেন মেয়ের জন্মদিনে। জন্মদিনে লোকে লোকারণ্য। তাই চাপ বেশি পড়লেও খুশি বাবা, মানুষজনও খুশি। লোকজনের ভিড় থেকে বাঁচিয়ে অথৈ এদিন ছিল নিজের বাড়িতেই। বাবা ছিলেন রাস্তায়-নিজের দোকানে। শুক্রবার বিকেলে তবুও মেয়ের জন্মদিন গ্রাহকদের নিয়ে পালন করেও পিতার মুখে হাজার ওয়াটের আলো। এত মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে দিনশেষে মেয়ের কাছে ফিরবেন তিনি।