নিজস্ব সংবাদদাতা- মন কি বাতে ২৬ শে জানুয়ারির ঘটনা উল্লেখ করে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার দাবি ওই দিনের ঘটনার মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীরা দেশকে অপমান করেছে, অসম্মান করেছে জাতীয় পতাকাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তেরেঙ্গার অপমান জাতির অপমান”। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, “দেশের জনগণ জাতীয় পতাকার অসম্মান সহ্য করে নেবে না।”
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্রাক্টর প্যারেড থেকে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় তাকে দেশ বিরোধী কার্যকলাপ হিসাবে শুরু থেকেই চিহ্নিত করে আসছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির দাবি গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে আন্দোলনকারীরা। কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আন্দোলনকারী কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে উত্তেজিত করে তুলেছে বিজেপির পাঠানো কিছু ষড়যন্ত্রকারী। সেইসঙ্গে ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা তৈরীর ঘটনার সঙ্গে বিজেপি ও আরএসএস-এর লোকেরাই জড়িত বলে বারবার দাবি করেছে কৃষক প্রতিনিধিরা। পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারার জন্য তারা দেশবাসীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে।
২৬ জনুয়ারি দুপুরের দিক থেকে একাধিক সংবাদমাধ্যম দেখাতে শুরু করে লালকেল্লায় কৃষকরা তাদের সংগঠন ও শিখ সম্প্রদায়ের পতাকা নিশান সাহিব উড়িয়ে দিয়েছে। দেখলে মনে হবে জাতীয় পতাকার জায়গায় ওই দুই পতাকা উড়ছে! কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হল জাতীয় পতাকা যথাস্থানেই ছিল, তার পাশে একটি জায়গায় আলাদা করে খুঁটি বেঁধে এই দুই পতাকা ওড়ানো হয়। এই ঘটনাকে উল্লেখ করে বিজেপি বিরোধী প্রতিটি শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি জাতীয় পতাকার অবমাননা করার তথ্য বাজারে চালানোর চেষ্টা করছে, যদিও আসল ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো।
প্রধানমন্ত্রীর আজকের মন কি বাত শুনে বোঝা গেল আসল ঘটনা অন্য হলেও কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় পতাকার অবমাননার তত্ত্বে অনড়। কিন্তু সংবিধান এবং আইনে জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করার যা বিধি আছে তার কোনোটি ২৬ জনুয়ারি লঙ্ঘিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় পতাকার অবমাননা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে দেশবাসীর একাংশের মধ্যে। অনেকেই অভিযোগ করছেন প্রধানমন্ত্রীর মতো শীর্ষ পদে বসে থেকেও নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে ভুল তথ্য দিয়ে উত্তেজিত করে তোলার চেষ্টা করছেন!