নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বছরের প্রথম থেকেই ধীরে ধীরে করোনার দাপটে অচল হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, বাস-ট্রেন প্রায় সবই একধাক্কায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। চার দেওয়ালের মধ্যেই নতুন করে এই কয়েক মাসে বিশ্বকে চিনতে শিখেছে সাধারণ মানুষ। আর করোনা অতিমারীর সেই ভয়ানক দিন গুলোয় যিনি গরীব মানুষের পাশে ছিলেন, তিনি হলেন সোনু সুদ।
তবে সমস্তকিছু এখনও সচল না হওয়ায় বাড়িতে বসেই কাজ সারতে হচ্ছে। চাকুরিজীবীরা যেমন ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছেন, তেমনই পড়ুয়ারা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমেই শিক্ষাপাঠ করছেন। মূলত, ডিজিট্যাল মিডিয়ার সুবাদে মুঠোফোনের মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসে অনালাইনে স্কুল করছে। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রাম বা সমাজে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষ সেই সুবিধা ঠিক মত ভোগ করতে পারছেন না। সেহেতু, যাঁদের স্মার্টফোন কেনার মতন আর্থিক অবস্থা নেই, তাঁদের জন্য এমআই ইন্ডিয়া সংস্থা বলিউড অভিনেতা সোনু সুদের সহযোগিতায় #ShikshaHarHaath নামক একটি উদ্যোগ চালু করতে চলেছে।
দেশের কোনও শিক্ষার্থী যেন অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত না হয়, এটাই মূল লক্ষ্য। ডিজিটাল বিভাজন ঘটাতে এবং সমাজের দুর্বল অংশের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শেখার ক্ষেত্রে অ্যাক্সেস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগটি বাচ্চাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করার পথটিকে আরও সুপ্রসারিত করবে বলেই সংস্থাটির দাবি। তারা বলেছে যে, প্রচারটি একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হবে যেখানে শেষ লক্ষ্যটি হবে ‘সকলের জন্য শিক্ষা’। ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে যে, স্মার্টফোন প্রস্তুতকারী এই সংস্থাটি সারা দেশে প্রায় হাজার খানেক রেডমি স্মার্টফোন শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এই অনবদ্য উদ্যোগটির অংশীদার হতে পারবেন আপনিও। তার জন্য আপনাকে পুরনো এমআই মোবাইল, যেটা ঠিকঠাক কাজ করছে যে কোনও এমআই সেন্টারে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। সেই মোবাইলগুলোকে আবার পুনরায় ঠিক করে এই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। একটি মাইক্রোসাইট চালু করা হয়েছে যাতে গ্রাহকরা তাঁদের স্মার্টফোন বন্ধক রাখতে পারেন। এমআই ইন্ডিয়া শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে। যেসব শিক্ষার্থীদের সত্যিই স্মার্টফোনের দরকার রয়েছে, তাঁদেরকেই চিহ্নিত করার জন্য থার্ড পার্টি এজেন্সিগুলির সঙ্গে কথা বলবে বলে জানিয়েছে।
এমআই ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনু জৈন সম্প্রতি বলেছেন, “দেশে প্রায় ২৫-৩০% লোকের কাছে স্মার্টফোন বা কোনওপ্রকার উন্নত ডিভাইস নেই। কিন্তু কোভিডের এই দুঃসময়ে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে স্মার্টফোনের অভাবের কারণে কোনও শিশুর পড়াশোনার ক্ষতি হওয়া উচিৎ নয়। তাই #ShikshaHarHaath এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে, যা সকল শিক্ষার্থীর পড়াশোনার বিষয়টিকে নিশ্চিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “পূর্বে সোনু সুদ অনেক সামাজিক কাজকর্ম করেছেন। তাই এই উদ্যোগটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতে পারিনা। সংস্থার ভাবমূর্তি আরও জোরদার করার জন্য আমরা সোনু সুদকে বেছে নিয়েছি।” এছাড়াও তিনি বলেন, “সোনু সুদকে আমাদের এই উদ্যোগে পাশে পেয়ে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। করোনা আবহে তাঁর অসাধারণ অবদানের সঙ্গে তিনি কেবল দরিদ্রদেরই সাহায্য করেননি, তাঁর জন্য এটা একটা আন্দোলন ছিল, যা সবাইকে আনন্দ দিয়েছে। আমরা আশা করছি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারব।”