নিজস্ব সংবাদদাতা- মহারাষ্ট্রের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধী বিজেপি ও রাজ্যের শাসক মহাজোটের মধ্যে তর্জা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এরই মধ্যে অনন্য কৃতিত্ব স্থাপন করলেন অঞ্জলি পাটিল। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনিই একমাত্র ট্রান্সজেন্ডার যিনি নির্বাচনে জয়লাভ করলেন!
জলগাঁওয়ের ভাদলি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে ইতিমধ্যেই জিতে গিয়েছেন অঞ্জলি পাটিল। তার এই জয়কে সেই রাজ্যের সমস্ত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ তাদের লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসাবে দেখছেন। রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পাশে থাকার বার্তা পাঠায়।
প্রথম ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থীর জয়লাভ যেমন মহারাষ্ট্রের এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য দিক, তেমনি আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল আম আদমি পার্টি এই প্রথম মহারাষ্ট্রে খাতা খুলল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার দাপকয়াল গ্রাম পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
বিজেপিকে অনেকটা পিছনে ফেলে রাজ্যের শাসক মহাজোটের এগিয়ে যাওয়াটাও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ফলাফল এরকম একপেশে হবে তা সেই রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও বুঝতে পারেননি। তাদের অনুমান ছিল বিজেপি কড়া প্রতিদ্বন্দিতার মুখে ফেলে দেবে শাসক মহাজোটকে। সেইসঙ্গে শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস পরস্পর হাত মিলিয়ে যতই রাজ্য সরকার চালাক, তাদের নিচুতলার সর্মথকরা অনেকেই জোট প্রার্থীদের সমর্থন করবেন না বলেই মনে করা হয়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত ফলাফলের যা গতিপ্রকৃতি তাতে দেখা যাচ্ছে তিন দলের সমর্থকেরা পরস্পরের প্রার্থীদের ঢেলে ভোট দিয়েছে।
মহারাষ্ট্রের ৩৪ টি জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৫ জানুয়ারি। গতকাল অর্থাৎ ১৮ জানুয়ারি থেকে ভোট গণনা শুরু হয়েছে, সম্পূর্ণ ফলাফল প্রকাশ পেতে আজ অর্থাৎ ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা পেরিয়ে যাবে বলেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত যে ফলাফল সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি পেয়েছে ৩২৩৬ টি পঞ্চায়েত আসন। শাসক মহাজোটের তিন শরিক শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস নিজেদের ঝুলিতে এখনো পর্যন্ত পুরতে পেরেছে যথাক্রমে ২৮২০ টি, ২৯৯৭ টি এবং ২১৩১ টি আসন। অর্থাৎ মহাজোটের দখলে গিয়েছে এখনো পর্যন্ত ৭৯৪৮ টি আসন। যা বিজেপির প্রাপ্ত আসন সংখ্যার থেকে দ্বিগুণেরও বেশি!
সবচেয়ে তাৎপর্যের হল নির্দল সহ অন্যান্য ছোট দলগুলি মিলে এখনো পর্যন্ত জয়লাভ করেছে ২৪৯৭ টি আসনে। এরমধ্যে মহাজোটের তিন শরিকের বেশকিছু বিক্ষুব্ধ প্রার্থীও আছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের দাবি পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের মানুষ তাদেরকেই সমর্থন করেছে, তাই তারা রাজ্যের একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছে। যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি বালাসাহেব থোরাট দাবি করেন, “রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মহাজোটের পক্ষেই মতামত দিয়েছে।”