নিজস্ব সংবাদদাতা- ‘পাখি কিছুতেই খাঁচায় থাকতে রাজি নয়’ এই প্রবাদ বাক্যটি দেওয়া যেতে পারে জিতেন্দ্র তিওয়ারি সম্বন্ধে! কখনো তিনি দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন, কখনো আবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরে আসছেন। তারপরই আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানাচ্ছেন পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’।
গতকাল পশ্চিম বর্ধমান জেলার নতুন জেলা কমিটি তৈরি করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। জিতেন্দ্র তিওয়ারি জায়গায় নতুন সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। তবে সবচেয়ে অবাক করার ঘটনা হল জেলা কমিটিতে জায়গা হয়নি প্রাক্তন জেলা সভাপতি এবং আসানসোল পৌরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির। এই প্রসঙ্গে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিচ্ছেন, দলীয় নেতৃত্বের দায়িত্ব দেবেন তা তিনি পালন করবেন। বলেছিলেন, “আমি দিদির সৈনিক, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।”
কিন্তু ভোল বদলে আজকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “হোয়েন দ্য গোয়িং গেটস টাফ, দ্য টাফ গেটস গোয়িং”। ইঙ্গিত অত্যন্ত স্পষ্ট- পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন, যে কঠিন সে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। ঘটনা হল দলের অভ্যন্তরে জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবস্থা সত্যিই অত্যন্ত কঠিন। তৃণমূল নেতৃত্বের আচরণে স্পষ্ট তারা তাকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কিন্তু ‘যে কঠিন সে পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে’ এই বার্তায় জল্পনা তৈরি হয়েছে চারিদিকে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে ১৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের জন্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রচেষ্টা ধাক্কা খেলেও এখনো হাল ছাড়েননি পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক। বিশেষ করে দলের মধ্যে পুরোনো জায়গা ফিরে না পেয়ে এই মুহূর্তে তিনি যথেষ্ট ব্যাকফুটে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অভ্যন্তরে তার বিশেষ কোনো ভবিষ্যত আছে বলে মনে হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে থেকে গেলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে হয়ত তিনি আর জোড়া ফুল শিবিরের টিকিট পাবেন না।
তাহলে কি বিজেপির নৌকায় উঠতে চলেছেন এই আইনজীবী বিধায়ক? এই বিষয়ে নতুন করে সুস্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত না দিলেও তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন তলায় তলায় শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়নি। হয়তো কিছুদিন অপেক্ষা করে যাওয়ার পর রাজ্যে ভোট ঘোষণা হলেই তিনি পদ্ম ফুল শিবিরে ভিড়ে যেতে পারেন ‘কঠিন পরিস্থিতি কাটানোর’ জন্য!