নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গতকালই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে তাদের দলীয় সমীক্ষায় উঠে এসেছে একুশের বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ক্ষমতায় তারাই আবার ফিরে আসছে। এমন দাবিও করা হচ্ছে তৃণমূল নাকি প্রায় ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে রাজ্যের ক্ষমতা ধরে রাখবে। তবে আসন সংখ্যা কমে ১৯০ এর আশেপাশে হতে পারে।
তৃণমূলের অভ্যন্তরে যখন ক্ষমতা ধরে রাখার এই অঙ্ক ক্রমশ ডালপালা মেলতে শুরু করেছে তখনই তাদের যাবতীয় হিসাব গুলিয়ে দিতে আসরে নেমে পড়েলেন হায়দ্রাবাদের মুসলিম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। গতকাল সকালেই দমদম বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে সোজা ফুরফুরা শরীফে চলে যান ওয়াইসি। সেখানে তিনি দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন পীরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকীর সঙ্গে। এই দীর্ঘ বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে ওআইসি জানিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তার দল আব্বাস সিদ্দিকীর হাত ধরে চলবে।
নভেম্বর মাসে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর এই ওয়াইসিই জানিয়েছিলেন তার দল ‘মিম’ পশ্চিমবঙ্গের ভোটেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তখন মনে করা হয়েছিল মিম হয়ত একাই এই রাজ্যের ভোটের লড়াই করবে। কিন্তু কিছুদিন আগেই ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী জানিয়ে দেন তিনি বিধানসভা ভোটে লড়াই করার জন্য নতুন একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করতে চলেছেন। এও জানান তিনি মিমের সঙ্গে জোট বেঁধে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। তখন থেকেই এরাজ্যে এই দুই মুসলিম সংগঠনের জোট বেঁধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার বিষয়টি ডালপালা মেলতে শুরু করে। গতকাল ওয়াইসির মন্তব্যের পর এই সংক্রান্ত যাবতীয় জল্পনা সত্যি প্রমাণিত হতে চলেছে।
তবে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী মিমে যোগ দেবেন, নাকি নিজের নতুন দল গঠন করে একত্রে জোট বেঁধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। কারণ জানুয়ারি মাস শুরু হওয়ার আগেই নিজের নতুন দল গড়ে তোলার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন আব্বাস সিদ্দিকী। যদিও এখনো পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তিনি পশ্চিমবঙ্গে মিমের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে আগামী নির্বাচনে লড়াই করতে পারেন।
যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল ফিরাদ হাকিম দাবি করেন পশ্চিমবঙ্গের একটা ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র আছে তাই এখানে মুসলিম মৌলবাদী রাজনৈতিক দল বিশেষ একটা সুবিধা করতে পারবে না। তিনি বলেন, “বিবেকানন্দের পশ্চিমবঙ্গে কোনো মৌলবাদী দলের জায়গা নেই।” তিনি এই মন্তব্য করে মিমের পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করেন। যদিও রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী এবং আসাদুদ্দিন ওয়াইসি যদি জোট বেঁধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে মুসলিমপ্রধান আসনগুলির অঙ্ক সম্পূর্ণ উল্টে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তাঁরা মনে করেন। একইভাবে মুসলিম ভোট যত বিভাজিত হবে তত বিজেপির সুবিধা বলেও অনেকে মনে করছেন।