হুগলি তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রভাবশালী নেতা…ঃ
হুগলি জেলার শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া অঞ্চলের এই প্রভাবশালী নেতার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে আগেই প্রকাশ করেছি প্রমান সহ। এর পরে আরও বেশকিছু এই সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে এসেছে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রভাবশালী, জনদরদি, অতি সক্রিয় তৃণমূল নেতার যে কটি একাউন্ট ছিল তার সবকটিই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। সেটা হতেই পারে। কিন্তু ঠিক এই সময়েই কেন এই ঘটনাটা ঘটলো তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তাহলে কী হুগলি জেলার তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের দাদা আচ্ছা লাল কোনো কিছু তার বর্তমান দলের থেকে গোপন করতে চাইছেন ?
সেইসঙ্গে কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের যে ওয়েবসাইটটি আছে তাতেও হঠাৎ করে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ওই ওয়েবসাইটটিতে আচ্ছা লাল যাদব সহ কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি সদস্যের ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার সহ যাবতীয় তথ্য দেওয়া ছিল। হঠাৎ করেই সেই সমস্ত তথ্য আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কী এগুলো পরিকল্পনামাফিক সরিয়ে দেওয়া হলো ? হঠাৎ এরকম পদক্ষেপ করল কেন কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আচ্ছা লাল যাদব?
সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা নিজের যাবতীয় একাউন্ট নিষ্ক্রিয় বা ডিলিট করে দিয়ে এবং পঞ্চায়েতের ওয়েবসাইট থেকে নিজের ও বাকি সদস্যদের যাবতীয় ফোন নাম্বার সরিয়ে দিয়ে উত্তরপাড়ার এই অন্যতম প্রভাবশালী নেতা সম্ভবত দল থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি একা হয়তো নয়, তার পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়েই কোনো পরিকল্পনা করছেন হয়তো। সেই পরিকল্পনা কি দলত্যাগ সংক্রান্ত কোনো কিছু? স্বাভাবিকভাবেই আচ্ছা লালের এই রকম পদক্ষেপ বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছে হুগলি জেলার রাজনীতিতে।
যারা হুগলি জেলা এবং উত্তরপাড়া অঞ্চলের রাজনীতি সম্বন্ধে অল্পবিস্তর খোঁজ-খবর রাখেন তারা জানেন কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে আচ্ছা লাল যাদবের প্রভাব অবিসংবাদিত। স্থানীয় অঞ্চলে কান পাতলে এই তৃণমূল নেতাকে কাজের মানুষ বলেই উল্লেখ করেন এলাকাবাসী। তার নেতৃত্বাধীন পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ ভালই কাজ করেছে বলে শোনা যায়। তাহলে কেন হঠাৎ তাকে নিয়ে এই জল্পনা ডালপালা মেলছে ?
দুদিন আগে অর্জুন সিং এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা রাত সাড়ে দশটার সময় আচ্ছা লাল যাদবের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এই নেতা যদিও অবশ্যই উত্তর দিয়েছেন ” অতিথি দেব ভব!” তো এত রাতে যদি কোন অতিথি আসে তাকে দেশে ফিরিয়ে দিতে পারেনা ! সেখানেই তিনি একথাও স্বীকার করেছেন যে অর্জুন এসেছিলেন সুন্দরকান্ড এর জন্য এবং শঙ্কুদেব পান্ডা তার বেশ অনুগত যাকে তিনি বিগত 2008 সাল থেকেই চেনেন।
কিন্তু তাই যদি সত্যি হয় তাহলে হঠাৎ কেন সোশ্যাল মিডিয়ার সব অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিলেন আচ্ছা লাল? কেন তিনি কানাইপুর অঞ্চল তৃণমূলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে প্রায় সবাইকে বের করে দিলেন? সবকিছুই কিন্তু ইঙ্গিত করছে যে আচ্ছা লাল কোনো কিছু আড়াল করার চেষ্টা করছেন! এমনকি আমাদের হাতে তিনি মিডিয়াকে যে সাফাই দিয়েছেন তার যে ভিডিও এসেছে সেখানে তাকে যে রূপে দেখা যায় বাস্তবে তিনি তার থেকে অনেক খোশমেজাজে এবং স্বচ্ছল।
তাকে দেখা গেছে এলাকার আম্ফান ঝড়ের সময় কিভাবে জনরোষকে নিমেষের মধ্যে সামলে দিনরাত্রি প্রায় 24 ঘন্টা খেটে মাত্র দু’দিনের মধ্যে এলাকাকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে। অথবা করোনার মহামারীর সময় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে ত্রাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য সকল প্রকার সাহায্য হাসিমুখে বিতরণ করতে।
আমাদের অনুমান বলছে গোটা বিষয়টা এত সহজ নয়। উত্তরপাড়ার রাজনীতিতে ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার একটা অঙ্ক এই যাবতীয় পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলেই মনে হয়। প্রসঙ্গত জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে আচ্ছা লাল যাদবকে শোকজ করা হয়েছে তার বাড়িতে অর্জুন সিং এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা আসার বিষয়টি নিয়ে।আচ্ছা লালের দাদা এবং হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব জানান গোটা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের নজরে আনা হয়েছে। তাদের নির্দেশেই শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আচ্ছা লাল যাদব দলের শোকজের যেই উত্তর দিন না কেন গোটা ঘটনা এত সহজে পরিণতি পাবে বলে মনে হয় না। আপাতত উত্তরপাড়া রাজনীতির দিকেই নজর থাকবে আমাদের।
যদিও এ কথা সত্য এই সকল ঘটনার পরবর্তীতেও বিজেপি তরফে এখনো পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিগত দু’বছর যাবৎ রাজনীতির ভাঙা-গড়ার খেলা লেগেই চলেছে, সেখানে কি নতুন সংযোজন রূপে দেখা দিতে চলেছে হুগলির প্রভাবশালী, জনদরদি, অতি সক্রিয় এই নেতা ? যদি তাই হয়, তো সে ক্ষেত্রে একতরফা ভাঙ্গনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের এই জেলার মাধ্যমে…! এখন আমাদের একটিমাত্র উপায় যার দ্বারা এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে, যা হলো কিনা, আগামী দিনে এই প্রভাবশালী নেতা কিভাবে এই শোকজ ব্যাখ্যা দেন পার্টির তরফ এ….