নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আবহে গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশ জুড়ে ঘোষিত হয়েছিল সম্পূর্ণ লকডাউন। তার জেরে স্কুল কলেজ ও অন্যান্য সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়েছিল। সেই থেকে দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আনলক প্রক্রিয়ায় অন্য সব কিছু স্বাভাবিক হলেও পড়ুয়াদের ভবিষ্যত নিয়ে কোনোরকম ঝুঁকি নিতে রাজি হয় নি রাজ্য সরকার। এমতাবস্থায় হাওড়ার এক ঘটনা তৈরি করেছে চাঞ্চল্য।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কুল কলেজ বা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অফলাইন ক্লাস শুরু করার অনুমতি এখনও দেওয়া হয় নি। কিন্তু তার মাঝেই হাওড়ায় দেখা গেল দিব্যি চলছে স্কুল। শুধু তাই নয়, পড়ুয়ারা মাস্ক ছাড়াই বেঞ্চে বসে ক্লাস করছে হাওড়ার এই স্কুলে। সরকারি ঘোষণা ছাড়াই কীভাবে স্কুল খুলল, কীভাবেই বা অফলাইন ক্লাস চালু হল, তা নিয়ে ধন্দে সকলেই। শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
জানা গেছে, ওই স্কুলের নাম শিশুতীর্থ বিদ্যালয়মণ্ডলী। এটি হাওড়ার শিবপুরে অবস্থিত এক প্রাথমিক বিদ্যালয়। কেন সরকারি অনুমতি ছাড়াই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছোটরা বাড়িতে ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারে না। বাড়িতে থেকে তারা বিরক্ত হচ্ছিল। তাদের দুষ্টুমিও বেড়ে যাচ্ছিল দিন দিন। তাই অনুমতির অপেক্ষা না করেই এই ব্যবস্থা করেছে স্কুল।
স্কুল না হয় অনুমতি ছাড়াই খুলল, কিন্তু অতিমারীর মাঝে মুখে মাস্ক ছাড়া কোনোরকম কোভিড বিধি না মেনে কীভাবে ক্লাস করছে বাচ্চারা? এ প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ছোটোদের এখন করোনা হচ্ছে না। স্কুলে যারা আসছে সেই খুদেরা বেশিক্ষণ মাস্ক পড়ে থাকলে অস্বস্তি বোধ করবে, নিঃশ্বাসের সমস্যা হতে পারে, দেহে অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটবে এসব কথা ভেবেই মাস্ক পড়তে বলা হয় নি কাউকে, জানিয়েছেন শিশুতীর্থ বিদ্যালয়মণ্ডলীর কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য শুধু পড়ুয়ারা নয়, সে স্কুল চত্বরে দেখা গেছে শিক্ষিকারাও ঘুরছেন মাস্ক ছাড়াই। তাঁদের অবশ্য বক্তব্য, “স্কুল বলছে মাস্ক না পড়তে, তাই পড়ছি না।”
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে স্কুল কলেজ খোলার চিন্তা ভাবনা করছে রাজ্য সরকার। তবে তাও নবম শ্রেণী থেকে কলেজ পর্যন্ত। ছোটোদের, বিশেষত প্রাথমিক পর্যায়ের পড়ুয়াদের স্কুল চালু করে দেওয়ার কথা একেবারেই ভাবা হচ্ছে না। কিন্তু তার মাঝেই কোনোরকম বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাওড়ায় স্কুল খুলে দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।