আধুনিক সমাজ যত বেশি অত্যাধুনিক হচ্ছে তত মানুষ সম্পর্ক নিয়ে আরও বেশি উদাসীন হয়ে পড়ছে। তাই প্রেম, ভালোবাসা বা বিবাহের মতো কোনও বিশেষ অনুভূতির মূল্যবোধ অনেক কমে গেছে এই সমাজে। সেক্ষেত্রে বাড়ছে মানসিক অশান্তি, মানসিক অবসাদ যেটা পরবর্তীকালে বাড়তে বাড়তে পৌঁছোয় খুন বা আত্মহত্যার দিকে। কেউ কেউ বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে এগোচ্ছেন কেউ আবার বিচ্ছেদের দিকে না গিয়ে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন, যেটাকে আমরা বলি পরকীয়া।
তাই নিজের কাছের মানুষটি চোখের আড়াল হলেই একটা অজানা আতঙ্ক যেন চেপে ধরে আপনাকে। তাই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতেই, আপনার পর্যবেক্ষণ আরও মজবুত করতে হবে। চোখ, কান খোলা রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
আসুন জেনে নিই মনোবিজ্ঞানীদের কিছু উপায়ের সম্মন্ধে –
১. আপনার সঙ্গী যদি ঘন ঘন ফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে এই আসক্তির প্রতি একটু গুরুত্ব দিন। কতক্ষণ সময় সে ফোনের প্রতি ব্যয় করছে তা লক্ষ্য রাখুন। কাজের ক্ষেত্রে ফোনের ব্যবহার স্বাভাবিক, কিন্তু ব্যবহারের সময় তার মুখের অভিব্যক্তি লক্ষ্য করুন, তাহলেই অনেকাংশে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন।
২. আপনার সঙ্গী যদি আগের তুলনায় পরিবারে কম সময় দিতে শুরু করেন তাহলে একটু সতর্ক হোন। তার কম সময় দেওয়ার কারণটি জানার চেষ্টা করুন। যে সময়টা তিনি কম দিচ্ছেন, সেই সময়ে তিনি কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। যদি আপনার সঙ্গী সে ব্যাপারে নানা অজুহাত দেখতে শুরু করে, অবশ্যই সতর্ক হন।
৩. ইদানিং যদি ঘন ঘন কোনও নাম সঙ্গীর মুখে শুনতে পান তাহলে লক্ষ্য করুন সেই নাম সে কি বিষয়ে উল্লেখ করছেন এবং তার সাথে তার মুখের ভাব লক্ষ্য করুন। যদি তিনি প্রশ্নটা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন তাহলে সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।
৪. আপনার সঙ্গীর মেজাজে কিছু বদল পাচ্ছেন কিনা তা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। নতুন কারোর প্রতি আকৃষ্ট হলে মানুষ সচরাচর তার পুরনো সঙ্গীর প্রতি অবজ্ঞা, ক্ষোভ এবং অবহেলা দেখাতে শুরু করে। এমন কিছু হলে কিছু সময় ভাগ করে নিন আপনার সঙ্গীর সঙ্গে। ভালো করে জানুন তার এই ব্যবহারের কারণ। অনেক সময় শরীরে কোনও অসুস্থতা দেখা দিলেও এমন হতে পারে। আর খেয়াল করুন এই খারাপ ব্যবহার কি শুধু আপনার সঙ্গেই করছেন নাকি বাকি সবার সঙ্গে। উত্তর যদি ‘ না ‘ হয় তাহলে ব্যাপারটা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করুন এবং খোঁজখবর নিতে থাকুন।
৫. আপনার সঙ্গী দাম্পত্য সম্পর্কে উদাসীন কিনা গুরুত্ব সহকারে দেখুন। তিনি শুধুমাত্র সম্পর্ক রক্ষার্থেই আপনার সঙ্গে রয়েছেন কিনা তা সবসময় খেয়াল করুন। সচরাচর অন্য কোনও সঙ্গী তার চাহিদা পূরণ করে দিলেই এমন অনীহা দেখা দেয় তাই সাবধান!
৬. আপনার নিয়মিত চলাফেরা বা যাতায়াত সম্মন্ধে যদি আপনার সঙ্গী হঠাৎ করেই প্রয়োজনের বেশি আগ্রহ পোষণ করেন তাহলে বুঝবেন বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত যত্নের আড়ালে অন্যকিছু লুকিয়ে নেই তো?
৭. আপনার সঙ্গী হঠাৎ করেই যদি নিজের প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে পড়েন। নিজের চুল, ত্বক, পোশাক আশাক সম্মন্ধে অতিরিক্ত সচেতনতা হঠাৎ করে বেড়ে যায় তাহলে সতর্ক হন। সাথে সাথে এটাও দেখুন যে তার এই পরিবর্তন শুধু আপনাকেই প্রদর্শনের জন্য কিনা। নাহলে অন্য সমস্যা ওঁত পেতে বসে থাকতেই পারে। সবশেষে এটুকুই বলি আপনার একটি সিদ্ধান্ত যেমন আপনাকে চরম কিছু খারাপের হাত থেকে বাঁচাতে পারে, তেমনই তার দিকে ঠেলেও দিতে পারে। তাই অত্যন্ত নিশ্চিত হয়েই সিদ্ধান্ত নিন।