বর্তমান প্রজন্ম হোক কিংবা পুর্ব প্রজন্ম দুই প্রজন্মের মধ্যে বিস্তর অমিল থাকলেও মিল একটায় সকলের এক অভিযোগ রাতে কিছুতেই ঘুম আসে না। সাতসকালে ঘুমের দেশে পাড়ি দিতে চাইলেও ঘুমের পরীর দেখা মেলে না। এই ঘুম না আসা ও রাত জাগা কিন্তু অনেক জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই সঠিক সময়ে ও সঠিক পরিমাণে ঘুমই সেই সকল সমস্যা নিয়াময়ের একমাত্র পথ্য। তাই আজ জানাব শুলেই ঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়ার অজানা উপায়।
অন্ধকার পরিবেশের সৃষ্টি :
অন্ধকার পরিবেশ তাড়াতাড়ি ঘুমের মোক্ষম ঔষুধ। আমাদের শরীরের মেলাটোনিন নিঃসরণে সাহায্যের জন্য আমাদের অন্ধকার দরকার। মেলাটোনিন হচ্ছে সেই হরমোন যা আমাদের সুষ্ঠু ঘুমের সময় নির্ধারণ করে। তাই অহেতুক আলো আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে থাকে। তাই ঘুমের সময় যত পারবেন আলোকে এড়িয়ে চলুন। অন্ধকার পরিবেশ ভালো ঘুমের আসল কারন।
শরীরকে ঠান্ডা রাখা :
আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস প্রয়োজন যা আমাদের মেলাটোনিন মাত্রাকে প্রভাবিত করে যা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। যত আমাদের শরীর নিস্তেজ ও ঠাণ্ডা হবে তত তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে। শরীরের তাপমাত্রা ঘটিয়ে দ্রুত ঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়ার অপর একটি পন্থা হল বিছানায় যাওয়ার আগে হালকা গরম জলে স্নান সেরে নেওয়া ।
রাতে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহলকে বহিষ্কার:
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে মানব জীবনে অগমন ঘটে কাজের যা দীর্ঘকালীন সময় ধরে আমাদের মস্তিষ্কে চাপের সৃষ্টির করেফলে বেশীরভাগ সময় আমরা ক্যাফাইনযুক্ত তরল খেয়ে থাকি। এছাড়া ঘুম ভাব কাটানোর জন্য কফি খাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে অবস্থিত ঘুমভাব অ্য্যাডেনোসাইন নামে এক রাসায়নিকের সৃষ্টি হয় এবং আমরা বেশি সময় জেগে থাকলে ঘুমের প্রয়োজন বোধ করি। কিন্তু তখন যদি ক্লান্তিভাব কাটানোর জন্য আমরা গরম কিছু লিকুইড অর্থাৎ কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে ফেলেন তাহলে ঘুমকে বিদায় জানাতে হবে। তাই রাতে এই জিনিষগুলি থেকে বিরত থাকুন।
নিজেকে চিন্তা মুক্ত করা
অনেকেই সারাদিন বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থাকেন এবং তার ফলে আপনাদের মধ্যে সেই বিষয়ক নানা ধরনের চিন্তার বাসা বাধে যা আপনার ঘুম কেড়ে নেওয়ার অন্যতম কারন। যত ঘুম কম হবে আপনি দুর্বল হয়ে পরবেন ফলে পরবর্তী দিনের জন্য নিজেকে সক্রিয় করতে পারবেন না এতে আপনার অন্যান্য বিষয়ক সমস্যা সৃষ্টি হবে। দেখতে গেলে অনেকটা চেন সিস্টেম একটির সাথে একটি যুক্ত। তাই সকল বিষয় ঠিক রাখার একমাত্র উপায় ঠিকভাবে ঘুমানো। তাই ঘুমানোর আগে মাথা থেকে সকল চিন্তা ঝেরে ফেলুন। ভাবুন যা হবে কাল নতুন করে ভাবা যাবে। তাই নিজেকে সর্বদা চিন্তামুক্ত রাখুন।
‘৪-৭-৮’ অভ্যাস
এটি একটি বিশেষ শ্বাসক্রিয়া । আর এই শ্বাসক্রিয়ার অভ্যাস করে ফেলতে পারলেই তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে বাধ্য। এই অভ্যাসের পোশাকি ভাষা ‘৪-৭-৮’। যাদের রাতে ঘুম আসে না ঘুমজনিত সমস্যা হয় তাদের ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমের দেশে পৌঁছে যাওয়ার এক মাত্র রাস্তা এই অভ্যাস। প্রথমে নাক দিয়ে চার সেকেন্ড শ্বাস নিন। তারপর সাত সেকেন্ড শ্বাসক্রিয়া আটকে রাখুন। আর আগামী ৮ সেকেন্ড মুখ দিয়ে আস্তে করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুম না আসে এভাবেই শ্বাসক্রিয়া চালান। বেশিক্ষণ না, মিনিট খানেকের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়বেন আপনি।
আজ থেকে এই বিষয়গুলি মেনে চলুন দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে ঘুমজনিত কোন সমস্যা আপনাকে চিন্তিত করছে না। আর সুফল লক্ষ্য করবেন আপনার শরীরে। নিজেকে ঝড়ঝড়ে অনুভব করবে। ঘুম থেকে উঠেই মাথা ভার থাকবে না ফলে গোটাদিন চিন্তামুক্ত ভাবে সমস্ত কাজে ধ্যান দিতে পারবেন। আর এই পন্থাগুলো অনুসরন করে কতটা উপকৃত হলেন অবশ্যই আমাদের জানতে ভুলবেন না।
[…] আড়ও পড়ুন… https://banglakhabor.in/2020/11/04/%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%87-%e0%a6%98%e0%a7%81%… […]
[…] ঘুমের মধ্যেও অনেকের দাঁত কামড়ানোর অভ্যাস […]