নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিজেপির অন্দরে বিক্ষোভ নতুন না। বর্তমানে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই ক্যান্ডিডেট বদলের দাবিতে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছেন গেরুয়া শিবিরের আদি কর্মীরা। মূলত দলের উদ্দেশ্যেই তাঁদের ক্ষোভ। এমনকি বেশ কয়েকটি জায়গায় নির্দল প্রার্থীও দাঁড় করিয়েছে তার। আর এবার সদ্য সিপিআইএম ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শঙ্কর ঘোষ-কে রাতারাতি শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। তবে এই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি আদি বিজেপি কর্মীরা। আর তাতেই বিজেপির দলের ভিতরে গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক এলাকায় শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধেও পোস্টার পড়েছে। তবে পোস্টারে কারো নাম লেখা নেই।
উল্লেখ্য, দলের বিরুদ্ধে একাধিকবার ক্ষোভ উগরে দিয়ে দিন কয়েক আগেই বাম যুবনেতার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন শঙ্কর ঘোষ। এর পরের দিন কয়েকের মধ্যেই কৈলাস বিজয়বর্গীয় হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেয় এক প্রাক্তন বামনেতা। এরপরই জল্পনা উঠছিল শিলিগুড়ি বিধানসভা কিংবা গ্রাম ফুলবাড়ী বিধানসভা কেন্দ্রে শঙ্কর ঘোষ কে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সেই জল্পনায় কার্যত সিলমোহর দেয় সম্প্রতি বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার দিন।
শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করে সদ্য বিজেপিতে যোগদান কারী শঙ্কর ঘোষকে। এরপরই দলের একটা অংশের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমা হয়। কারণ দীর্ঘদিনের যারা বিজেপির কর্মী, তারা টিকিট না পেয়ে কি করে একজন রাতারাতি যোগদান করে প্রার্থীর টিকিট পায়। তবে এবার শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে শিলিগুড়িতে পোস্টার ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা।
এই ঘটনায় শঙ্করের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গের বিজেপির আইনজীবী সেলের ইনচার্জ নৃপেন দাস শঙ্কর ঘোষকে প্রার্থী করায় ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পাশাপাশি জেলার বর্তমান সভাপতি প্রবীণ আগরওয়ালকেও দুর্নীতিপরায়ণ বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। এদিন তিনি আরো বলেন “শঙ্কর ঘোষের মতো চরিত্রহীন, নীতিহীন, দুর্নীতিবাজকে প্রার্থী হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা প্রতিবাদ জানাব, প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানাব যাতে মানুষ শঙ্কর ঘোষকে একটিও ভোট না দেন।”
শুধু তাই নয়, শ্যামাপ্রসাদ জাগরণ মঞ্চ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে গতকাল শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে শিলিগুড়িতে পোস্টারে পড়ার পর থেকে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এমনিতেই গত কয়েক সপ্তাহ আগে প্রার্থী বদলের দাবিতে হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন চালায় অসংখ্য কর্মী। এরমধ্যেই ফের শিলিগুড়িতে প্রার্থী নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, যা ভোটের আগে বেকায়দায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে।