নিজস্ব সংবাদদাতা- এই বছর পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসমেও বিধানসভা ভোট হবে। কিন্তু বাংলা দখল করা যে তাদের মূল লক্ষ্য তা বারবার বুঝিয়ে দিচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। অসমের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়েও বাংলার জন্য একের পর এক আলোচনায় অংশগ্রহণ করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ কোচবিহার থেকে পরিবর্তন যাত্রা রথের উদ্বোধন করার আগে সকালে অসমের চিরাঙে স্বঘোষিত রাজবংশী ধর্মগুরু অনন্ত মহারাজের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার সঙ্গে ছিলেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামানিক।
পৃথক কামতাপুরী রাজ্যের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন রাজবংশী নেতা অনন্ত রায়। তিনি কোচবিহার পিপলস পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করেছেন। পরবর্তীকালে স্বঘোষিত ধর্মগুরু হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেন। কোচবিহারের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে অনন্ত মহারাজের প্রভাব বেশ ভালোই। আজ অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি ঘোষণা করেন তার নেতৃত্বাধীন কোচবিহার পিপলস পার্টি এনডিএর শরিক হিসাবে কাজ করবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে। বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থন করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
অনন্ত রায়ের সঙ্গে বিজেপির এই জোট আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে কোচবিহারে কিছুটা এগিয়ে দিল বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এর পাশাপাশি বিমল গুরুংকে হারানোর ক্ষত কিছুটা হলেও বিজেপি সামলে নিতে পারল বলে অনেকেই মনে করছেন। কারণ রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ কেবলমাত্র কোচবিহারে নয়, জলপাইগুড়ি দিনাজপুর সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তারা বসবাস করেন। স্বাভাবিকভাবেই অনন্ত মহারাজ বিজেপিকে সমর্থন করায় রাজবংশী সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের ভোট গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একচেটিয়া সাফল্য লাভ করেছিল বিজেপি। সেসময় মনে করা হয়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গুরুং শিবিরের সমর্থন তাদের দিকে থাকায় বাজিমাত করতে সুবিধা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে গুরুং তৃণমূলকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করলেও তার বিকল্প হিসেবে গোর্খা সম্প্রদায়ের আর একটি রাজনৈতিক দল জিএনএলএফের সমর্থন আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছেন দিলীপ ঘোষেরা। রাজবংশীদের অন্যতম নেতা অনন্ত রায়ের সমর্থন উত্তরবঙ্গে বিজেপির অবস্থান আরও খানিকটা মজবুত করল বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।