নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ রাজ্যে ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। গত পাঁচ দফার ভোটের মত এই দফাতেও রয়েছে গ্ল্যামারের ঝলকানি। সেই সঙ্গে বাংলায় বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের মধ্যেও ভোটের লাইনে মানুষ ভিড় জমান কিনা তারও বড় পরীক্ষা রয়েছে এই দফায়। আজ বাংলার মোট ৪৩টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে। গত বিধানসভায় এই আসনগুলির মধ্যে ৩২টি গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। ঘাসফুল শিবির ঘরে তুলেছিল মোট ভোটের ৪৫ শতাংশ। বাদবাকি ১১টি আসনের মধ্যে ৭টি আসন গিয়েছিল কংগ্রেসের দখলে, আর বামেদের ঝুলিতে ৪টি। গতবার বাম-কংগ্রেস জোটবন্ধ হয়ে লড়েছিল। মোট ভোটের হিসেবে তাদের প্রাপ্তি ছিল ৩৯ শতাংশ ভোট।
সেই তুলনায় গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির উত্থান যে চমকপ্রদ, তা বলাই বাহুল্য। বৃহস্পতিবার ভোট হতে চলা উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর এবং পূর্ব বর্ধমানের বেশ কয়েকটি আসনেও সেই বার পদ্ম ফুটেছিল। লোকসভার নির্বাচনের সময় এই পর্বের ১৯টি আসনের ৪১ শতাংশ ভোট গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের দিকে। অন্যদিকে বাকি ২৪টি আসনে তৃণমূলের দখলে ছিল ৪৩ শতাংশ ভোট। লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখানকার মতুয়া ভোটের অধিকাংশটাই চলে গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের দখলে।
বাংলায় নদিয়া এবং উত্তর চব্বিশ পরগনায় মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক একটা বড় নির্ণায়ক শক্তি বরাবরই। গত লোকসভায় এই ভোট ব্যাঙ্ক পেতে ঝাঁপিয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি দুই পক্ষই। কিন্তু নাগরিকত্ব ইস্যুতে সেই ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের পকেটে পুড়তে সক্ষম হয়েছিল গেরুয়া শিবির। তবে এবার কি হবে, সেটাই দেখার। রাজনৈতিক মহলের মতে, এবারের ভোটে অন্যতম নির্ণায়ক হতে চলেছে এই সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-ই।
উল্লেখ্য, আজ ষষ্ঠ দফার ভোটে সবচেয়ে নজর কাড়া কেন্দ্র কৃষ্ণনগর উত্তর। একদিকে মুকুলের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে লড়াই তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের। ২০১৬ বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রের ৪৪ শতাংশ ভোট ছিল তৃণমূলের দখলে। সেখানে মাত্র ১৪ শতাংশ গিয়েছিল বিজেপির কাছে। কিন্তু ২০১৯ সালে উল্টে যায় পরিস্থিতি। শুধুমাত্র এই বিধানসভা কেন্দ্রের ৫৯ শতাংশ ভোট চলে যায় বিজেপির দিকে। দ্বিতীয় হয়েই থামতে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর বামপ্রার্থী মাত্র ১০,৫০০ ভোট পেয়েছিল। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাই সেদিকে কড়া নজর প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই।