নিজস্ব সংবাদদাতা: গত রবিবার সন্ধেবেলার ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি মিম নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত! কিন্তু ঠিক তার ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধেবেলা দেখা গেল, যেই দুজনকে খাটো করে মিমটি বানানো হয়েছিল, তাঁরাই রাতারাতি নায়িকা বনে গিয়েছেন। একটু খোলসা করা যাক। ফেসবুকে ‘মিমতন্ত্র’ নামক একটি পেজ থেকে রবিবার সন্ধ্যায় একটি মিম শেয়ার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তাতে দেখা যাচ্ছে, উপরে লেখা, “বাঙালি বাড়িতে যে সব মহিলাদের দেখা যায়…!” এর নীচে দুই অভিনেত্রী তথা একুশের ভোটে বিজেপি দুই তারকা প্রার্থী শ্রাবন্তী এবং পায়েল সরকারের ছবির সঙ্গে লেখা রয়েছে, ‘সেক্সি ননদ-বৌদি’, তৃণমূলের দুই সেলেব সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহানের ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘স্টাইলিশ দিদি-বোন’, এবং তার ঠিক নীচে বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর ও নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে ‘কাজের মাসি’।
মিমটি দেখলেই মালুম হচ্ছে পোস্টদাতার উদ্দেশ্য কী! তবে এই মিম শেয়ার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতর্কের ঝড় শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে ‘কাজের মাসি’ তকমাটি নিন্দা না প্রশংসা? এই নিয়ে অনেকের মধ্যেই একটা মতভেদ দেখা গিয়েছে। কেউ কেউ যেমন সাতপাঁচ না ভেবেই নিন্দায় সরব হয়েছেন, আবার তেমন অনেকেই এই ‘কাজের মাসি’ তকমায় গর্ব অনুভব করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, সিপিএম সবসময় যেই শ্রেণীর হয়ে লড়াই করে, এখানে তাঁদের কথাই বলা হয়েছে। এই নিয়ে এত চিন্তিত হলে চলবে না।
ঠিক একইরকম বক্তব্য শোনা গিয়েছে দীপ্সিতার গলাতেও। এই মিম নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মধ্যেই নিজের ফেসবুক পেজ থেকে একটি প্রতিক্রিয়া লেখেন বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। জেএনইউয়ের এই ছাত্রীনেত্রী লেখেন, “বিজেমূল একটা মিম বানিয়েছে। আমার আর মীনাক্ষী দি-র ছবির পাশে ‘কাজের মাসি’ লিখেছে। এখন ওরা কী ভেবে লিখেছে, কেন লিখেছে তার জবাব দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কথা হল, যে শ্রেণির লড়াই আমরা লড়ি তাদের সাথে, তাদের দাবিদাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের কখনওই অসুবিধা হয় না।’
এখানেই থামেননি দীপ্সিতা। বলেন, “আমাদের নির্বাচনের সময় মমতা ব্যানার্জীর মত মিথ্যার বেসাতি করে বলতে হয়না- “আপনার বাড়ির বাসন মেজে দেব”। গৃহপরিচারিকাদের জন্য, লকডাউনে তাদের বেতনের জন্য, তাঁদের সুরক্ষার প্রশ্নে দাবিদাওয়ার লড়াই বামপন্থীরা করেছে ও করবে। সব শেষে একটা কথা- “ওদের জ্বলবে, আমাদের এমনই চলবে।”