নিজস্ব সংবাদদাতা: গত কয়েকদিনে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের প্রতিটি পোস্ট লক্ষ্য করলেই বিষয়টি বোঝা যাবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একেবারে ‘ডাই-হার্ট’ ফ্যান তিনি। এমনকি ‘ঈশ্বর’ বলেও সম্বোধন করেছেন বেশ কয়েকবার। যদিও কমিউনিস্টরা ভগবানে বিশ্বাসী নন, তবে আবেগ আর এসব নিষেধ কবে শুনেছে! এদিকে, প্রয়াত বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীকেও ‘বন্ধু’ বলে মনে করেন তিনি। বহু বছর পর শনিবার প্রায় মধ্যরাতে বাম সমর্থক অভিনেতা জিতু কামালের আর এক নতুন ‘বন্ধু’ তৈরি হয়েছে। যাঁকে এখন বাংলার মানুষ চেনে নন্দীগ্রামের ‘নতুন দিদি’ নামে। তিনি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ২০২১-র নির্বাচনে নন্দীগ্রামে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তিনি।
ঘটনাটি গত পরশুর। ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা। কলকাতার বুকে রাত্রি ঘনিয়েছে অনেকটাই। কিন্তু গাঙ্গুলিবাগানের মোড়ের ভিড়টা বাড়ছিল ক্রমশই। গাড়ি থামিয়েও কেউ কেউ শুনছিলেন বক্তৃতা। বক্তা, সেই মিনাক্ষী। ওখানে থেকে জিতুর বাড়ির দূরত্ব বেশি নয়। বছর ৩৭-এর মেয়েটির বক্তব্যে আপ্লুত অভিনেতা। তাঁর ‘উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনায়’ মোহিত জিতু সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
লিখেছেন, “আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর খুবই বড় ভক্ত, তা আমার বলতে দ্বিধা নেই.. তারপরের স্থানই বন্ধু সুভাষ চক্রবর্তী এর.. বারাসাত কাচারী ময়দান ২০০২ অথবা ২০০৩ হবে, আমি ওনার বক্তব্য শোনার জন্যে বড়দের স্লোগানে গলা মিলিয়ে চলে গেলাম… আজ দীর্ঘ প্রায় ১৯-২০ বছর পরে আমার বাড়ির কাছে, প্রায় মাঝ রাতে আরও এক বন্ধু তৈরী হলো, নাম তার “মীনাক্ষী”। বাপ্ রে বাপ্! কী উচ্ছ্বাস, কী উদ্দীপনা…”। ব্যক্তিগত ভাবে হয়ত দু’জনের আলাপচারিতা নেই। শনিবার সকাল অবধিও মীনাক্ষী জিতুর কাছে ছিলেন শুধুই প্রার্থী। কিন্তু সেদিন রাতের ওই ‘মায়াবী’ মুহূর্তের সেই স্লোগান আর মেঠো গলায় নন্দীগ্রামের ‘নতুন দিদি’র বক্তব্যে জিতু খুঁজে পেয়েছেন নতুন বন্ধুত্বের আস্বাদ। হঠাৎ করেই মীনাক্ষী হয়ে গিয়েছেন তাঁর চেনা কেউ।
এর আগে দলবদলের রাজনীতি, আর রংবদলের খেলার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা জানিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন জিতু। লিখেছিলেন, “আপনাকে ভালোবাসি স্যার.. আপনি বাম রাজনীতি করেন শুধু তাই জন্যে নয়.. আপনি সততার, সত্যের, নিষ্ঠার আরেক নাম..আপনি “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য”। তবে এখানেই থামেননি এই টেলি অভিনেতা। তিনি আরও লিখেছিলেন, “এই পোস্টের জন্যেও, আমার কাজের ক্ষতি হবে, সংসার চালাতে ব্যাঘাত ঘটানো হবে, প্রচুর কমপ্লেইন পড়বে, তবুও আমি রাজনীতির ঊর্দ্ধে গিয়ে সত্যের কথা বলবোই, বাকি দুবেলা পেট নাহয় ঈশ্বরই চালিয়ে দেবেন, যদি সত্যের পথে থাকতে পারি।”