নিজস্ব সংবাদদাতা: গত রবিবার, ২মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করে রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের থেকে এবার বড় সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। ২১৩টি আসন দখল করেছে ঘাসফুল শিবির। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল বের হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে হিংসার চিত্র অব্যাহত। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ- সব জায়গাতেই একই ছবি।
বাংলায় নির্বাচনে জয়ের পরে অনেকেই দাবি করেছিলেন, এরপর জাতীয় স্তরের মুখ হয়ে উঠতে পারেন মমতা। বিশেষ করে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে। কিন্তু বাংলা জুড়ে এই ভোট পরবর্তী হিংসার ছবি কি উল্টে বিপাকে ফেলবে আগামী দিনে মমতাকে জাতীয় স্তরে উঠে আসতে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতির অন্দরমহলে।
এদিন ট্যুইট করে বাংলার নির্বাচন পরবর্তী হিংসার নিন্দা করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। ইতিমধ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেক নেতা-নেত্রীরাই। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে যে চিত্র বার বার দেখানো হচ্ছে তাতে বিপাকে পড়তে পারেন মমতাই। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এবারের বাংলা বিধানসভা প্রথম থেকেই প্রচার জোরকদমে ছিল। কোনও কোনও বুথফেরত সমীক্ষায় আভাস মিলেছিল যে বিজেপি হয়তো এবার সরকার গঠন করতে পারে। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের দিন কার্যত যাবতীয় সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে বিরাট সাফল্য নিয়ে জেতে তৃণমূল।
মূলত বিজেপিকে রাজ্যের ক্ষমতা দখল থেকে রুখতেই এবারের ভোট হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু বিজেপিকে আটকালেও ফলাফল প্রকাশের পর থেকে জেলায় জেলায় অশান্তি অব্যাহত। যদিও মঙ্গলবারই সকলকে শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন সবাই শান্ত থাকুন, সমস্যা হলে পুলিশকে জানান। কিন্তু বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস এখন তেমন শক্তিশালী নয়। কাজেই আঞ্চলিক দলের মুখ হয়ে উঠে আসার সুযোগ রয়েছে মমতার সামনে। তৃণমূল নেত্রী জয়ের খবর পাওয়ার পরেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন আপ, শিবসেনা, সপা-র মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু ভোট পরবর্তী বাংলার হিংসার ছবি যত সামনে আসছে ততই মনে করা হচ্ছে ধাক্কা খেতে পারে জাতীয় স্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি।