নিজস্ব সংবাদদাতা: “আমার গাড়ির দরজা ইচ্ছা করে চেপে দিয়ে আঘাত করেছে। ওঁরা ভেবেছিল, ভাঙা পা নিয়ে ঘরবন্দী হয়ে যাব। আর সভা করতে পারব না। কিন্তু আমার শরীরে ব্যথা থাকলেও আমি জানি সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা আরও বেশি। সুতরাং আমাকে তো আসতেই হত।” হুইল চেয়ারে বসেই পুরলিয়ার একাধিক সভা মঞ্চ থেকে এভাবেই জ্বলে উঠলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ব্যথা পা নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে আজই জেলাসফরের প্রথম দিন কাটান মমতা। একাধিক জায়গায় তিনি প্রচার সারেন। প্রতিটি সভা থেকেই বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন অগ্নিকন্যা। তুলে ধরেন গত বুধবার নন্দীগ্রামে কী ঘটেছিল সেই প্রসঙ্গও। সৌভাগ্যের জোরে তিনি সেদিন বেঁচে গিয়েছেন বলে জানান মমতা। এরপরই খতিয়ান দেন জঙ্গলমহলের উন্নয়নের। আবার তিনি প্রচার না করলে বিজেপি ভোট লুঠে নেবে বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল নেত্রী।
সোমবার বাঘমুণ্ডির সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ ভেবেছিল ভাঙা পা নিয়ে আমি সভা করতে পারব না। কিন্তু আমার শরীরে ব্যথা থাকলেও আমি জানি সাধারণ মানুষের যন্ত্রনা আরও বেশি, সুতরাং আমাকে তো আসতেই হত।” তিনি এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, “গত ১৩-১৪ তারিখ পুরুলিয়ায় আমার বৈঠক ছিল। কিন্তু আমি করতে পারিনি। ১০ তারিখের একটি ঘটনায় পায়ে চোট লাগে। সাথে মাথা ও কপালেও আঘাত পেয়েছি। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছি সেদিন।”
পাশাপাশি তাঁর সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে বলেন, “একসময় অযোধ্যা পাহাড় সন্ত্রাসের আঁতুরঘর ছিল। এখন এই পাহাড় পর্যটকদের প্রিয় স্থান। গত কয়েক বছরে অযোধ্যা পাহাড়ের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখানে বিরসা মুণ্ডার নামে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। রঘুনাথ মূর্মূর নামে ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছে। কুর্মি ভাষার বোর্ড তৈরি হয়েছে। বিনা পয়সায় রেশন পাচ্ছেন আপনারা।”
শুধু বাঘমুন্ডিই না, আজ বলরামপুরের সভা থেকেও একইরকমভাবে সরব হতে দেখা যায় মমতাকে। সেখানেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ ভেবেছিলেন ভাঙা পা আমি আর ভোটের প্রচারে বেরোবো না। কিন্তু আমি ভাঙি তবু মচকাই না। আমার কণ্ঠরোধ করা অত সহজ নয়। যতক্ষণ প্রাণ রয়েছে আমি লড়ে যাব। আমাকে বাধা দিতেই আমার ওপর হামলা হয়েছে।” একই সঙ্গে এদিন নিজেকে স্ট্রিট ফাইটার বলে উল্লেখ করে মমতা জানান, “আমি বরাবর স্ট্রিট ফাইটার। ফাইট করতে ভয় পাই না। পেছন দিয়ে ধাক্কা না মেরে সামনে এসে লড়াই করো।”