নন্দীগ্রামে মাটি আঁকড়ে পড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল বিকেল থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত মমতা থাকবেন নন্দীগ্রামেই। মমতা নিজেই এই কেন্দ্রে প্রার্থী, বিপক্ষে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া এক সময় দিদির স্নেহধন্য শুভেন্দু অধিকারী। স্বভাবতই লড়াইটা প্রেস্টিজের। নন্দীগ্রামকে বড় জয় পেয়ে গোটা রাজ্যে সেই জয়ের রেশ ছড়াতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী। তাই বাকি সব কেন্দ্র ছেড়ে দিদি ঘাঁটি গেড়েছেন নন্দীগ্রামেই। আজ নন্দীগ্রামে একের পর এক সভা করলেন মমতা। বয়াল হোক বা ঠাকুরচক বা ভেটুরিয়া, সকাল থেকে মমতা একের পর এক জায়গায় সভা করলেন। মমতা রোড শো-ও করেন। নন্দীগ্রামে চুটিয়ে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। দু জনেই আক্রমণের সুর চড়ালেন। দিদি যখন শুভেন্দুর নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিভাজনের রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলছেন। শুভেন্দু তখন মমতার বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ করলেন।
মমতা গতকালই বলেছেন, তিনি নন্দীগ্রামকে বেশি সময় দিচ্ছেন, ভবানীপুরে দাঁড়ালে তিনি অন্য কেন্দ্রে আরও অনেক সভা করতে পারতেন। কিন্তু তা না করেই নন্দীগ্রামের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন। এখানেই বিজেপির ভক্তরা একাংশ বলছে, দিদিকে স্ট্র্যাটেজির ফাঁদে ফেলা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘প্রলয়’ থেকে গুলিকাণ্ডে বাম সরকারকে ক্লিনচিট! নন্দীগ্রামে এ কোন রাজনৈতিক কৌশল মমতার?
বিজেপি শিবির বলছে, শুভেন্দু অধিকারীকে যে মমতাকে চাপে রেখেছেন সেটা পরিষ্কার। মমতা বিপদ বুঝেই নন্দীগ্রামে পড়ে আছেন। এর ফলে মমতাকে আটকে রাখা গিয়েছে। তাদের মতে, তৃণমূলের মুশকিল হল জোড়া ফুলের স্টার ক্যাম্পেনার মাত্র একজন। অভিষেক আগের চেয়ে অনেক বেশি সভা করছেন ঠিকই, কিন্তু মমতা না গেলে তৃণমূলের সেই স্পিরিটটা থাকে না। প্রসঙ্গত, আগামী ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামের পাশাপাশি ৩০টা আসনে ভোট। নন্দীগ্রামের প্রভাব পূর্ব মেদিনীপুরে পড়লেও, ভোট শুরুর আগে মমতার সভা মিস করছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও বাঁকুড়া কেন্দ্রগুলি। দক্ষিণ ২৪ পরগণার চার কেন্দ্র গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগর কেন্দ্রে ভোট হবে। বাঁকুড়ায় ভোট হবে আট কেন্দ্রে। পূর্ব মেদিনীপুরেও পশ্চিম মেদিনীপুরে ৯টি করে কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে।
তৃণমূল শিবিরের অবশ্য বক্তব্য নন্দীগ্রামে পড়ে থেকে মমতা সঠিক কাজই করেছেন। নন্দীগ্রামে বিজেপি ও অধিকারী পরিবারকে হারাতে পারলে তার প্রভাব গোটা রাজ্য়ে পড়বে। পাশাপাশি দুই মেদিনীপুরে মমতার ছোঁয়া থাকায় অনেক আসনে জেতা যাবে। তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, বিজেপি আসলে ফাঁদ পাতার নামে নিজেরাই ফাঁদে জড়াচ্ছে। মমতা যত নন্দীগ্রামের কাছে যাবেন, যতবার যাবেন, তত তাঁকে বাংলার মানুষ আরও কাছে টেনে নেবে। এবার দেখার কোন ফুলের দাবি শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়।