নিজস্ব সংবাদদাতা: গতবছর একটা সময় ছিল, যখন বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে পড়েছিল আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো প্রথম বিশ্বের দেশগুলো। সেইসময় তাদেরকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করে পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। এমনকি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন টিকা পাঠিয়েও উন্নত এবং পড়শি দেশগুলির পাশে থেকেছে ভারত। আর এবার পুরোনো দিনের কথা মনে রেখে ভারতের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল তারা।
হঠাৎ করে দেশে কোভিড সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ার পর আমেরিকা, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলি ভারতকে সাহায্যের অঙ্গীকার করল। রবিবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। ডোভালকে তিনি জানিয়েছেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে এই মুহূর্তে ভারতের কী কী প্রয়োজন তা চিহ্নিত করেছে বাইডেন প্রশাসন। অবিলম্বে ভারতকে ওষুধ, পিপিই কিট, ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন এবং কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের কাঁচা উপাদান সরবরাহ করবে ওয়াশিংটন।
একই ভাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রশাসনও কোভিড মোকাবিলায় ভারতের পাশে থাকার বার্তা করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গতকালই জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে ভারতে ৪৯৫ টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, ১২০ টি নন ইভ্যাসিভ ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছে ব্রিটেন। মঙ্গলবার, অর্থাৎ আগামীকাল সকালে তা নয়াদিল্লী পৌঁছবে। তারপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে ভারতকে সাহায্য করবে ব্রিটেন। ভারতকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মর্কেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁও।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, জার্মান সেনাবাহিনী অক্সিজেন সরবরাহে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে। তা ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জ্যানেজ লেনারসিক জানিয়েছেন, নয়াদিল্লীর তরফে তাঁদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরা দ্রুত সাড়া দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মানব সভ্যতার সামনে ঘোর সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে করোনা ভাইরাস। এর থেকে কেউ মুক্ত বা বিচ্ছিন্ন নয়। তাই সঙ্কট মোকাবিলায় সমষ্টিগত প্রয়াস দরকার। বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি যেভাবে এখন ভারতের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে, তাতে সেই প্রয়াসই চোখে পড়ছে।