নিজস্ব সংবাদদাতা: হুগলির ডানলপের মাঠে সোমবার জনসভা করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর হেলিপ্যাড তৈরির জন্য প্রচুর গাছ কাটা হয়েছে। সদ্যই এই বিষয়টি সর্বসমক্ষে এসেছে। যা একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না এলাকাবাসী। সূত্রের খবর, সেই মাঠে শতাব্দী প্রাচীন প্রচুর গাছ ছিল। একের পর এক কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর খোলা জায়গায় যেদিকে তাকানো যায়, সেদিকেই সবুজ গাছে ভরা। কিন্তু দিন দুই আগে থেকে দেখা গেল, আচমকাই সব ধু ধু, ফাঁকা। সবুজের নামগন্ধ নেই। কেবল মাটি থেকে দাঁড়িয়ে থাকা গাছের কাণ্ড চোখে পড়ছে। কোথাও আবার মাটি থেকেই উপড়ে গিয়েছে বৃক্ষদল।
বিষয়টি মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করেননি ডানলপের কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রই বারবার পরিবেশ সংরক্ষণে জোর দেওয়ার কথা বলে। গাছ কাটলে শাস্তির নিদান দেয়। অথচ প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামবে বলে হেলিপ্যাড তৈরির জন্য শতাব্দীপ্রাচীন সব গাছ কাটা পড়ল। নিয়ম কি তবে শুধু সাধারণ মানুষের জন্য? এই প্রশ্নও উঠছে।
গাছ কাটার ফলে যেহেতু প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে, সেই কারণে হেলিপ্যাড যেখানে তৈরি হয়েছিল আজ ওই এলাকায় বৃক্ষরোপণ করল রাজ্যের তৃণমূল সরকারের প্রতিনিধিরা। “মোদী এলে ধ্বংস, দিদি এলেই সৃষ্টি”- এই পোস্টারকে সামনে রেখে আজ ডানলপের সেই মাঠে বৃক্ষরোপণ করেন অঞ্চলের তৃণমূল নেতারা। সেখানকার বিধায়ক অসিত মজুমদারের নেতৃত্বে সম্পন্ন হয় এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
তৃণমূল বিধায়ক অসিতবাবু এরপর বলেন, “পরিবেশ দফতরের অনুমতি ছাড়াই গাছ কেটে ফেলেছে বিজেপি। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান পরিবেশ রক্ষা হোক। তাই ডানলপ মাঠে বৃক্ষরোপন করেছি। বিজেপি ধ্বংস করেছে। আমরা সৃষ্টি করছি। পরিবেশ দফতরের কাছে অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটার জন্য বিজেপিকে নোটিশ দেওয়ার আবেদন করব।
উল্লেখ্য, গতকাল সাহাগঞ্জের ডানলপ মাঠে সভা করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এই মাঠেই বুধবার সভা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মহারথীর সভা ঘিরে আগে থেকেই তেতে রয়েছে এলাকার রাজনীতি। দু’দলের মাঠ পরিদর্শন থেকেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। শুরু হয়েছিল স্লোগান যুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর সভা শেষ হয়েছে। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর সভা। তার মধ্যেই গাছ কাটা নিয়ে উত্তাপ ছড়াল এলাকায়। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি যুব মোর্চার নেতা সুরেশ সাউ।