নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বিরিয়ানি ভালোবাসেনা এমন বাঙালীর সংখ্যা হাতেগোনা। কিন্তু বাঙালীর রসনায় কেমন করে জায়গা করে নিল এই বাদশাহী খাওয়ার? তাও আবার রাজকীয়তা বজায় রেখে সম্পূর্ণ এক নিজস্ব আঙ্গিকে? আসুন আজ জেনে নিই তারই গল্প।
১৮৫৬ সালের মে মাসে, আওয়াধ-এর দশম নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ তাঁর ভগ্ন হৃদয় নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। ব্রিটিশরা তার জমি, কোষাগার, তার স্বাচ্ছন্দ্য সম্পর্কিত যাবতীয় উপাদান বাজেয়াপ্ত করেছিল, এমনকি তিনি লখনউ থেকেও বিতাড়িত হন। কলকাতার উপকণ্ঠে মেটিয়াবুরুজে নবাব তাঁর প্রিয় রাজধানীর একটি প্রতিরূপ পুনর্নির্মাণ করেছিলেন। বিশালাকার ইসলামিক কাঠামো, তাঁর প্রিয় পরিখানা,চিড়িয়াখানা, ঘুড়ি ওড়ানো, কবুতরবাজি রাজকীয় খাবারের রান্নাঘর কি ছিলোনা সেখানে। কিন্তু নবাবের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অনেকাংশে কমে যাওয়ায় রাজকীয় খাবারের মান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছিল।
সুতরাং নবাবের রাধুনিরা মাংসের ঘাটতি মোকাবিলার জন্য একটি উদ্ভাবনী উপায় নিয়ে ভাবেন। তারা রাজকীয় উপকরণে আলু এবং ডিম যুক্ত করেন এবং এইভাবে কলকাতার বিরিয়ানি-র জন্ম হয়।
আওয়াধী বিরিয়ানি আর কলকাতার বিরিয়ানির মধ্যের প্রধান তফাত হল আলুর ব্যবহার। কেন ব্যবহৃত হল বিরিয়ানিতে আলু? ওয়াজিদ আলী যখন কলকাতায় আসেন, তখন তাঁর কর্মীদের প্রশস্তভাবে খাওয়ানোর মতো পর্যাপ্ত তহবিল তাঁর হাতে ছিল না। তবে তার রন্ধনসম্পর্কীয় ঐতিহ্যই ছিল তার সবচেয়ে বড় ধন । তাই কলকাতায় কয়েক বছর পর বিরিয়ানিতে আলুর প্রচলন হয়েছিল।আলু পর্তুগিজরা ভারতে নিয়ে এসেছিল এবং আমদানি হওয়ার কারণে এটি অভিনবত্ব হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। এটি সেসময় বেশ ব্যয়বহুলও ছিল, যদিও মাংসের তুলনায় খুব বেশি ব্যয়বহুল নয়,তাও আমদানিকৃত এই সবজিটি রান্নায় রাজকীয়তার মাত্রা যোগ করতো। এছাড়াও আলুর ব্যবহার থালায় খাওয়ারের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করতো।
এভাবেই বিরিয়ানি তে যুক্ত হলো আলু, আজ যেই আলু ছাড়া বিরিয়ানি বাঙালীর মনকে তৃপ্তি দেয়না। বিরয়ানী-র আলু একসময় নবাবের প্রয়োজনীয়তা মিটিয়েছিল এবং বাঙালীর জন্য আজও তা রসনার প্রয়োজনীয়তা মিটিয়ে চলেছে।
[…] কলকাতার বিরিয়ানি-র কাহন […]
[…] জুতোর মধ্যে সামান্য বেকিং সোডা মাখিয়ে রেখে দিন। পরেরদিন জুতোর ওই […]