নিজস্ব সংবাদদাতা: গত রবিবার প্রকাশ হয়েছে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। আর সেইদিন রাত থেকেই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিংসার খবর আসছে। আর এই হিংসার ঘটনাগুলির প্রায় প্রতিটিতেই নাম জড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূলের। আর এতেই বেজায় বিরক্ত বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল। বামনেত্রী থেকে টলিউড শিল্পীদের একাংশ, সকলেই মুখ খুলেছেন হিংসার বিরুদ্ধে। সোমবার তৃণমূলের হামলা নিয়ে সরব হন সিপিএম নেত্রী ঐশী ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো নিন্দা করে হিংসা-হানাহানি বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন সিনেমা পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়।
সৃজিত মুখোপাধ্যায় ‘স্টপ পোস্ট পোল ভায়োলেন্স’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে টুইট করেছেন সোমবার রাতে। তিনি লিখেছেন, সিপিএমের পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রেড ভলান্টিয়ার্স ব্রিগেডের যে সদস্যরা কোভিড পরিস্থিতিতে অক্লান্ত লড়াই চালাচ্ছেন, তাঁদেরও আক্রমণ করেছে ঘাসফুল শিবিরের নিচুতলার কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। অনেকেই খুন হচ্ছেন। এ আবার কী ধরনের বিজয় উৎসব! এই হিংসার তীব্র নিন্দা করছি।
পিছিয়ে থাকেননি টালিগঞ্জের নায়ক আবীর চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “আপনাদের অনুরোধ করছি, জয়ের পর বিনয়ী হোন।” এখন আমাদের মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করা উচিত। তবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেনের মতো নাগরিক সমাজের অন্যতম মুখেরা তৃণমূলের এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এখনও কেন মুখ খোলেননি, সেই প্রশ্ন তুলেছে সিপিআইএম ও বিজেপি।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে যত ভোট সংগঠিত হয়েছে, তাতে টলিউডের শিল্পীমুখদের ভূমিকাও কম ছিল না। সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থন না করলেও, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তি’ বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার করে গেছেন তাঁরাও। ভোটের সময় প্রকাশিত ‘আমি এই দেশেতেই থাকব’ গানটিও এ বিষয়ে বড় প্রভাব ফেলে জনমানসে। অনেকেই মনে করছেন, বুদ্ধিজীবীদের এই সংগঠিত প্রতিবাদ বিজেপিকে রুখে দিয়েছে অনেকটাই। সেই তাঁরাই এবার বিরক্ত ভোটে জেতার পরে তৃণমূলের গুন্ডামি নিয়ে।
বিধানসভা ভোটে পশ্চিম বর্ধমানের জামুরিয়া কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষ। তিনি টুইটারে কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সিপিএমের পার্টি অফিসের মধ্যে আসবাবপত্র ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সিপিএম কর্মীর চা-র দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। জেএনইউ-এর প্রাক্তন নেত্রী ঐশী লিখেছেন, টিএমসি অন্তত মানুষের রায়কে সম্মান করুক। বাংলার মানুষের স্বার্থে কাজ করার জন্য তৃণমূলকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। কিন্তু ওই দলের কর্মীরা অন্যের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছেন, পার্টি অফিস ভেঙে দিচ্ছেন। এসব কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।