নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ২৭ মার্চ বাংলায় শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। ইতিমধ্যেই দু’দফার ভোটপর্ব মিটে গিয়েছে। এখনও আরও ৬ দফা নির্বাচন বাকি রয়েছে। আগামী ২ মে জানা যাবে, কার দখলে থাকবে বাংলা। আপাতত আট দফার নির্বাচনে এই নিয়ে জারি রাজনৈতিক কচকচানি। আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই রাজ্যের কান্ডারি কে হবেন, তা নির্ণয়ের যুদ্ধে যেমন প্রতিটি রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রুতি ঝড় বইয়েছে, তেমনই উত্তুঙ্গে উঠেছে দলগুলির বিজ্ঞাপনী প্রচারও৷
সাম্প্রতিকতম তথ্য বলছে, বাংলা, কেরল, আসাম, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি মিলিয়ে ৮২৪ আসনের নির্বাচনে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন বাবদই খরচ হতে চলেছে আনুমানিক সর্বোচ্চ ২২০ কোটি টাকা৷ বাংলা, তামিলনাড়ু ও কেরলের মতো বেশি আসনের রাজ্যেই মূলত চড়া রয়েছে এই বিজ্ঞাপনী খরচ৷ তবে পরিসংখ্যান ঘাঁটলে স্পষ্ট, দক্ষিণের দুই রাজ্য বাংলার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অনেক পিছিয়ে৷ কেবল বাংলার গদি দখলের লড়াইয়েই ১২০ থেকে ১৩০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা৷
সেই অঙ্কও আবার মূলত দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী- তৃণমূল ও বিজেপির প্রতিযোগিতার ফসল৷ মাঠে-ময়দানে তো বটেই, তার পাশাপাশি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম, আঞ্চলিক সংবাদপত্র ও সামাজিক মাধ্যমেও বিপুল অঙ্কের বিজ্ঞাপনী বিনিয়োগ সত্যিই তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো৷ শেষ বিচারে এই রাজসূয় উদ্যোগে লাভের গুড় ঘরে উঠবে নাকি পিঁপড়ে এসে খেয়ে যাবে, তা সময়ই বলবে। তবে এখনই এটা বলে দেওয়া যায় যে, খেলা যত গড়াচ্ছে, বিজ্ঞাপনী প্রচারে তৃণমূলকে গোলের মালা পরাচ্ছে বিজেপি৷ আর বাকিরা তো আলোচনায় আসারই জায়গা পাচ্ছে না৷
দিনে দিনে পদ্মের তহবিল যত ফুলে-ফেঁপে উঠেছে, ততই সমানুপাতিক হারে বেড়েছে তাদের বিজ্ঞাপনী আগ্রাসন৷ এবারের বিধানসভা নির্বাচনের যুদ্ধে বাংলাও সাক্ষী থাকছে সেই আক্রমণাত্মক প্রচারের৷ আর্থিক দিক থেকে কোনও কার্পণ্যই রাখছে না গেরুয়া দল।
বিজ্ঞাপনী যুদ্ধে পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। ‘বাংলার গর্ব মমতা’ থেকে শুরু করে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, রাজ্যের পথ-প্রান্তর ছয়লাপ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে৷ টিভি রেডিওতেও উন্নয়নের কম প্রচার করেনি জোড়াফুল শিবির৷ তবে ভোট যত এগিয়ে এসেছে, ততই যেন তৃণমূলকে টেক্কা দিয়েছে বিজেপি৷ সংবাদপত্রের পাতা থেকে টিভির স্ক্রিন বা সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল, শুধুই ‘আর নয় অন্যায়’, অথবা বাংলায় ‘আসল পরিবর্তন আনতে এবার বিজেপি’৷ তৃণমূল বিজেপির এই প্রচারের দাপটে বাকি দলগুলির বিশেষ জায়গা হয়নি।