নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ গঠন হলো তৃণমূল জমানায় তৃতীয়বারের মন্ত্রীসভা। তবে গত দু’বারের মতো এবার সেখানে নাম নেই শুভেন্দু অধিকারীর। ভোটের মাত্র ৩ মাস আগেই দলবদল করে তিনি চলে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। আর এবার বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েট প্রতিপক্ষকে হারিয়েছেন তিনি। আর তারই পুরস্কার স্বরূপ এবার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হলেন শুভেন্দু অধিকারী। সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজকেই বিরোধী দলনেতার নাম ঘোষণা করে দিল বিজেপি। শনিবার রাতে দিল্লীতে জে পি নাড্ডার বাড়িতে একটি বৈঠকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সংগঠন সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। সেখানেও বিরোধী দলনেতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আর আজ কলকাতার বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

বিরোধী দলনেতা কে হবেন, তা নিয়ে দলীয় বিধায়কদের মতামত নিতে সোমবার কলকাতার হেস্টিংসে পরিষদীয় দলের বৈঠকে বসে বিজেপি। দলের অভ্যন্তরে আদি-নব্য বিবাদের কথা মাথায় রেখেই বিরোধী দলনেতা নির্বাচনে বসেছিল গেরুয়া শিবির। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে নিযুক্ত দলের দুই পর্যবেক্ষক, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। একইসঙ্গে আজ দলের নবনির্বাচিত ৭৭ জন বিধায়ককেও ডাকা হয়। ছিলেন রাজ্যের শীর্ষনেতারাও। সেখানেই শুভেন্দুর নাম নির্বাচিত হয়। দায়িত্ব নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “বৈঠক হল। আমার নাম ঘোষণা হল। হাততালি পড়ল। কিন্তু মন ভাল নেই। কারণ বাংলা ভাল নেই। দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তা অবশ্যই পালন করব। আমার তিনটে লক্ষ্য, হিংসা মুক্ত বাংলা। যে কোনও অন্যায় হলে সাংবিধানিক রীতিনীতি মেনে প্রতিবাদ করা এবং যে কোনও ধরনের গঠনমূলক কাজ।”

এদিন বৈঠকের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমে জানান, সবার মতামত নিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতেই বিরোধী দলনেতা নির্বাচন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে জয়ী হওয়ার পর থেকেই বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর পাল্লাই ভারী ছিল। মুকুল রায়ের নাম প্রথমে থাকলেও মুকুলবাবুর শরীর ভাল নেই। বিরোধী দলনেতা হলে সারা রাজ্য জুড়েই ছুটে বেড়াতে হবে। মুকুল রায়ের পক্ষে সেই ছোটাছুটি সম্ভব নয়। কিন্তু রাজ্য বিজেপির পুরনো নেতৃত্বের একটা বড় অংশই আবার চাইছিল মনোজ টিগ্গাকে বিরোধী দলনেতা করা হোক। মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা এবারও জয়ী হয়েছেন। এর আগে পরিষদীয় দলের নেতাও তিনি ছিলেন। তবে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা হিসাবে নির্বাচিত করা হলো।