বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপি। যে বাংলায় বিজেপি একটা বড় সময়, একজন বিধায়ক জিতলেও খুশি হত, সেই রাজ্যেই এখন পদ্মরাজের অপেক্ষায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ১৮টা আসনে জিতে মহাসাফল্য, তারপর তৃণমূলের একের এক হেভিওয়েটের যোগদানের পর বাংলা দখলে বিজেপি-র আশা আরও বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশা ১৮০টার বেশি আসন পেয়েই পশ্চিম বাংলায় ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। পূর্ব ভারতে এর আগে ত্রিপুরা, অসমে ক্ষমতা দখলের পর এবার শ্যামপ্রসাদ মুখার্জির রাজ্যেও পদ্ম আসতে চলেছে বলে আশায় শাহ-নাড্ডারা। কিন্তু বাংলায় সরকার গড়ার আশায় নামা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বারবার শুনতে হচ্ছে এক কথা। ক্ষমতায় এলে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন। দিল্লির মত বাংলায় কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রজেক্ট করে লড়ছে না বিজেপি। তাই জল্পনা আরও বাড়ছে। আপাতত সবচেয়ে বেশি যে নামগুলো নিয়ে জল্পনা চলছে, দেখে নেওয়া যাক সেগুলি—-

৫) বাবুল সুপ্রিয়

ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা বাংলায় বিজেপির প্রথম জয়ী মুখ। গোটা দেশে দারুণ ফল করলেও, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় মাত্র দুটি আসনে জিতেছিল। তার মধ্যে আবার একটা ছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে জেতা দার্জিলিং। আর একেবারে নিজেদের জোরে জেতা আসনটা ছিল বাবুল সুপ্রিয়ের জেতা। বাবুলকে মন্ত্রিসভাতেও এনেছিলেন মোদী। মন্ত্রী হিসেবে ভাল কাজও করেন। বাংলাতেও বেশ জনপ্রিয় বাবুল। গানের গলার মত ব্যবহারেও মিষ্টতা আছে। বাবুলকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল বছর দুয়েক আগে থেকেই। সাংসদ হলেও এবার বাবুলকে বিধানসভায় প্রার্থী করা হয়েছে টালিগঞ্জ থেকে।

৪) লকেট চ্যাটার্জি

টলিউডে যখন অনেকেই বিজেপি-তে আসতে দ্বিধায় ছিলেন, লকেট চ্যাটার্জি সে সব না মেনে মোদী শিবিরে নাম লেখান। প্রথম থেকেই ঠান্ডাঘরে না বসে, মাঠে নেমে আন্দোলন করে দলে নজর কাড়েন। আগে ভোটে হারলেও, ২০১৯ লোকসভায় হুগলি লোকসভা কেন্দ্র অনবদ্য জয়ের পর লকেট এখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সুনজরে। সাংসদ লকেটকে এবার বিধানসভায় প্রার্থী কে বিজেপি ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। লকেটকে শেষ অবধি মুখ্যমন্ত্রী করা হলে বাংলা নিজের মেয়েকে চায়, তৃণমূলের এমন স্লোগানের যোগ্য জবাব দেওয়া যাবে বলে মনে করেন বিজেপি-র তৃণমূল স্তরের কর্মীরা।

৩) স্বপন দাশগুপ্ত

সুশিক্ষিত, ভদ্র, দিল্লি বিজেপির পছন্দের মুখ। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগ্য হওয়ার জন্য যে মাপদণ্ড রেখেছেন তার সব কটাই স্বপন দাশগুপ্তের রয়েছে। অনেকেই বলছেন, প্রথা ভেঙে যেভাবে রাজ্যসভা থেকে যেভাবে সরাসরি স্বপনকে বিধানসভায় সটান প্রার্থী করল বিজেপি, তাতে ইঙ্গিতটা পরিষ্কার।

২) শুভেন্দু অধিকারী

নন্দীগ্রামে সত্যি যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে হারাতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী তাহলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী না করা কঠিন হবে। কারণ শুভেন্দু তৃণমূল মন্ত্রিসভাতেও গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। তৃণমূল যদি শেষমেশ হেরে যায়, সেক্ষেত্রে শুভেন্দুর দলছাড়াটা যে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে ধরা হবে। সেক্ষেত্রে শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে কী?

১) দিলীপ ঘোষ

বিজেপির পয়লা নম্বর পছন্দ। গতবার বিধানসভায় জিতেছিলেন, তারপর সাংসদও হয়েছেন। দক্ষ সংগঠক হিসেবে কাজ করছেন। খোদ নরেন্দ্র মোদী ইঙ্গিত দিয়েছেন দিলীপ ঘোষের মত নেতা পাওয়া গর্বের। গোরু থেকে গোবর, যত বিতর্কিত মন্তব্যই করুন না কেন দিলীপ যে বাংলার হটসিটে পদ্মের সেরা বাজি সেটা বলার অপেক্ষা থাকে না।