পুকুর ছাড়া মাছ চাষ সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা রোজগার করা সম্ভব। এমনই এক পদ্ধতি হল বায়োফ্লক পদ্ধতি৷ খুব অল্প যায়গায় কৃত্তিম চৌবাচ্চা তৈরি করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের পদ্ধতিকে বায়োফ্লক পদ্ধতি বলা হয়।বায়োফ্লক বা ফিশ ফার্মিং মাছ চাষের একটি অত্যন্ত লাভজনক পদ্ধতি। বায়োফ্লক আসলে অল্প জলে বেশি মাছ উৎপাদন করার পদ্ধতি।
মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটা নবজগরণের মতো। মাছের বর্জ্য বা ফিড থেকে উৎপন্ন নাইট্রেট, নাইট্রাইট , অ্যামোনিয়ার মতো বিষাক্ত পদার্থগুলো প্রোটিনাসিয়াস ফিডে রূপান্তরিত হতে পারে, যা অত্যন্ত দরকারি পণ্য।অনেকের মতে এই প্রযুক্তি মাছ চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে জলের গুণগত এবং ক্ষতিকারক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে মাইক্রোবায়াল প্রোটিন খাদ্যে পরিণত করা হয়। এই পদ্ধতিতে healthy recycling-ও বলা হয়।
সুবিধা
> এই পদ্ধতি অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।
> এতে মাছের খাবারের খরচ অনেকাংশে হ্রাস পায়।
> এই পদ্ধতিতে মাছের দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেকাংশে বাড়ে।
> এই পদ্ধতিতে সাধারণ মাছ চাষের তুলনায় ১০ গুণ বেশি মাছ উৎপাদিত হয়।
> এই পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে দ্বিগুণ আয় হয়।
> জলের মান আরও উচ্চতর হয় এবং জল বিষাক্ত নাইট্রোজেন মুক্ত করা যায়।
> এই পদ্ধতিতে মাছ পুকুরের তুলনায় তাড়াতাড়ঈ বেড়ে ওঠে।
অসুবিধা
> আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করার ফলে খুব সতর্ক থাকতে হয়
> অল্প জায়গায় বেশি মাছ চাষ করা হয় বলে কোনও কারণে ফাঙ্গাসের আক্রমণ চৌবাচ্চায় থাকা সব মাছের ক্ষতি হয়বায়োফ্লকের জন্য উপযুক্ত কিছু মাছের প্রজাতি
> অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র যুক্ত সিঙ্গি, মাগুর, পাবদা, কই ইত্যাদি।
> সাধারণ কার্প, রুই, তেলাপিয়া, মিল্কফিস ইত্যাদি।
> শেলফিসের মধ্যে ভান্নামেই এবং টাইগার শ্রিম্প।
> শুধু খাওয়ার মাছ নয়, সাজিয়ে রাখার মতো রঙিন মাছও বর্তমানে এই পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে ৷ মাত্র কয়েক হাজার টাকা খরচ করেই কৃত্তিম চৌবাচ্চা বানিয়ে চাষ শুরু করা যায়। তবে সঠিক ভাবে ট্রেনিং নিয়ে তবেই এই চাষ শুরু করবেন। সঠিক তথ্যের অভাবে অনেকে এতে অসফল হয়েছেন। তারা অবশ্য এই পদ্ধতিকে বায়োফ্লপ বলে থাকেন।