নিজস্ব সংবাদদাতা: সৌজন্যের রাজনীতি বাংলায় ঠিক কতটা প্রাসঙ্গিক? প্রশ্নটা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিধান চন্দ্র রায়-জ্যোতি বসুর সখ্যতা, রাজনীতির ময়দানে চরম শত্রু হলেও ব্যক্তিগতভাবে সদ্ভাব বজায় রাখা বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা। তবে বর্তমান সময়ে তা কতটা প্রাসঙ্গিক, সেই নিয়ে সন্দেহ আছে খোদ রাজ্যবাসীর মনেই। অসুস্থ বুদ্ধদেবকে দেখতে মমতার হাসপাতালে ছুটে যাওয়া সৌজন্য অবশ্যই, তবে সেটা রাজনীতির মধ্যে পড়ে কিনা, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলতেই পারে। তবে এবার সেই সৌজন্যের রাজনীতিই দেখালেন দক্ষিণ দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআইএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য।
নীতিগতভাবে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির ঘোর বিরোধী। তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই দলকে সরিয়ে মানুষের মন পেতে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছেন। আর প্রচারে নেমে তন্ময় বাবু ঢুকে গেলেন কিনা তাদের প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসেই! তবে শুধু কার্যালয়ের ভিতরে যাওয়া নয়, তাঁদের হাত থেকে খেয়ে এলেন মুড়িও। হ্যাঁ, সিপিআইএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটিয়েছেন। গত রবিবার এই অভিনব প্রচারের সাক্ষী ছিল গোটা দুর্গানগর এলাকা। সৌজন্য এবং প্রতি সৌজন্য দেখল রাজ্য-রাজনীতি।
সূত্রের খবর, সেদিন প্রচারে করতে করতে স্বাধীনতা সংগ্রামী মাধব দে স্মৃতি ভবনে ঢুকে পড়েন তন্ময় বাবু। যেটা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ও। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বাটি থেকে মুড়ি খেয়ে রীতিমতো গল্পও জুড়ে দেন। তারপর স্থানীয়দের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে বলতে শুরু করেছেন সৌজন্যের আড়ালে কী এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটটা চেয়ে নিলেন তন্ময় ভট্টাচার্য? তবে এই ‘সৌজন্য প্রচার’-র ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই এক বামপন্থী সমর্থক লিখেছেন, “দুর্গানগরে ভোট প্রচারে এক অভিনব সৌজন্য দেখা গেল! এই ছবিগুলিই হয়ে উঠুক বাংলার আদর্শ। আমরা কোভিড ও আমফানে বহু নাগরিককে হারিয়েছি! তাই এখানে বজায় থাকুক সৌভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা এবং সম্মান।”