নিজস্ব সংবাদদাতা- উত্তরবঙ্গ তৃণমূলে আবার ভাঙনের সুর। শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার সময় আশঙ্কা করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদ ও মালদা, এই দুই জেলা থেকে একটা বড় সংখ্যক তৃণমূল নেতা-কর্মী দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারে। যদিও প্রাথমিকভাবে দল ছাড়ার এরকম ঘটনা না ঘটলেও এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হতে পারছে না রাজ্যের শাসক দল। তাদের সেই আশঙ্কা উস্কে দিয়ে বেসুরো হয়ে উঠলেন মালদার পুরানো তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার।
মৌসম বেনজির নূরকে দলের জেলা সভাপতি করে দুলাল সরকারকে জেলায় দলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের এই জেলায় দলকে ধরে রাখার উদ্দেশ্যে গতমাসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মালদার নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে দুলাল সরকার ওরফে বাবলা সরকারও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আজ হঠাৎই তিনি সাংবাদিকদের সামনে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
বাবলা সরকারের অভিযোগ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দল তাকে পুরসভার চেয়ারম্যান করেনি। প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন ধরে ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকলেও এই তৃণমূল নেতার পুরপ্রধান হওয়ার শখ পূরণ হয়নি এখনও পর্যন্ত।
বাবলা বাবু এও বলেন, “আমার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দল আমাকে জেলা সভাপতি করেনি। দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে গেলেও যথোপযুক্ত মর্যাদা দেওয়া হয়নি আমাকে।” বাবলা সরকারের ক্ষোভের কথা জানার পরই মালদার তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, “আমি এই বিষয়ে কি বলব, যা বলার শীর্ষ নেতৃত্ব বলবে। আমার এই বিষয়ে কিছু বলার নেই। তবে বাবলা বাবুকে আমিই তো হাতে ধরে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের নিয়ে এসেছিলাম। তাহলে উনি যে বলছেন উনি সবচেয়ে পুরানো নেতা তা কি করে হল?” ঘটনা হল একসময় হলায়-গলায় সম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে বাবলা সরকার ও কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল ছাড়া বা বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে বাবলা সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু না জানালেও জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক উস্কে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি একনিষ্ঠভাবে দলের কাজ করে গেলেও বাবলা সরকারকে উপযুক্ত স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি তৃণমূলের পক্ষ থেকে, তাই ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।