নিজস্ব সংবাদদাতা- ‘বাড়ি তুমি কার’, এই প্রশ্ন উঠতেই পারে ঐতিহ্য মন্ডিত প্রতীচী-কে ঘিরে। গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব বুঝিয়ে দিলেন প্রতীচী প্রশ্নে তারা পিছু হটবেন না। রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলে তার দাবি, “জমি মাপজোক করা হলেই আসল সত্যি বেরিয়ে যাবে।”
সপ্তাহ দুই আগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি প্রতীচীর মালিকানা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রেখেছেন এই নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। বিজেপির পক্ষ থেকে দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “আইন সবার জন্য সমান। উনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বলে আইন তো আর আলাদা হতে যাবে না।” এর পাশাপাশি তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে। “যে লোক তিনটে বিয়ে করে তার কথার গুরুত্ব বাঙালীদের কাছে নেই”, এ রকমই দাবি ছিল দিলীপ ঘোষের!
পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালির গর্ব হিসাবে অমর্ত্য সেনকে চিহ্নিত করেন। অভিযোগ করেন বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি-কৃষ্টিকে অপমান করে, তাই তারা অধ্যাপক সেন-কে পর্যন্ত অপমান করছে। বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের নেতারাও প্রতীচী বিতর্কে বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিজেপির নির্দেশ মতো কাজ করছেন বলে দাবি করে তারা।
প্রতীচী তৈরি করেছিলেন অমর্ত্য সেনের মাতামহ ক্ষিতিমোহন সেন। তাঁর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। পরবর্তীকালে উত্তরাধিকার সূত্রে অমর্ত্য বাবু এই বাড়িটির মালিকানা পান। তিনি প্রতিবছর কিছুদিনের করে অন্তত প্রতীচীতে এসে থাকেন।
গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসচিব অশোক মাহাতো দাবি করেন ‘প্রতীচী’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছে! আরও বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রেখেছেন বলে তার অভিযোগ। এক্ষেত্রে তিনি রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে জানান, “রাজ্য ভূমি দপ্তর মাপজোক করলেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে কোনো জমি দখল করে না থাকলে প্রতীচীকে নিয়ে আর বিতর্কও তৈরি হবে না।”
এই বিষয়ে অমর্ত্য সেনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। জানা গিয়েছে তার তরফ থেকে সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে আইনজীবীর চিঠি পাঠানো হয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে। তার পরেই তিনি গোটা বিষয়ে মুখ না খোলার সিদ্ধান্ত নেন।