নিজস্ব সংবাদদাতা: গতকাল সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে চলতি বিধানসভা নির্বাচনের ভোট প্রচার। বিগত প্রায় দু’মাসের যুদ্ধ অবশেষে সমাপ্ত। তবে আর একটা ভোটপর্ব বাকি আছে। কিন্তু কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভোট প্রচার শেষ। এরপর আর আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ কোনও ভোট প্রচারে সামিল হবে না। মূলত করোনা সঙ্কট মাথায় রেখে ভোট প্রচার থেকে সমস্ত দলকেই বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে এতদিন ধরে চলতে থাকা ভোট কোন পথে চলেছে এবং সেটার ফলে কী পরিস্থিতি দাঁড়ালো। হয়তো ভোটের ফলাফল এখনই অনুমান করা যাবে না। সেটার জন্য আগামী রবিবার পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। তবে শেষ ভোটটা হয়ে যাওয়ার পরেই হয়তো সেদিন রাত থেকে এগজিট পোলের ফলাফল আসতে শুরু করবে।
একটা কথা বলা যায়, যে ভোটের দুটো পর্যায় হল, এখন শেষ পর্যায়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল করোনা সঙ্কট। এর আগেও করোনা ছিল। কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েভে যেভাবে রাজ্যের মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, অক্সিজেনের অভাবে মানুষের মৃত্যুর হার বেড়ে গেল, সেই পরিস্থিতিতে এই ভোট প্রচার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছিলেন, যে শেষ তিনদফা ভোট একসঙ্গে করে দেওয়ার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকার কিছুতেই রাজি হল না। এইরকম একটা পরিস্থিতিতে যখন মাদ্রাজ হাইকোর্ট সাঙ্ঘাতিক ভাবে নির্বাচন কমিশনকেই দুষলো। তখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেল।
এই চেন্নাই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘটনাচক্রে বঙ্গসন্তান। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবজারভেশনে আরও অনেক বেশি অক্সিজেন পেয়ে গেছে। বিজেপি প্রকাশ্যে এই মতামতের বিরোধিতা করেছে এবং তারা বলেছে, এই ব্যাপারে তারা সুপ্রিম কোর্টেও যাবে। কিন্তু ভোটের পর এটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। আজ, এই সময়ে দাঁড়িয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বক্তব্য প্রবল প্রভাব ফেলেছে মানুষের মধ্যে। এখন ভোটের মধ্যে এটার কতটা প্রভাব পড়বে, কতটা পড়বে না তা শেষ দফায় বোঝা যাবে।
কেননা যত জায়গায় ভোট হয়ে গেছে, সেগুলো এখন ইভিএম বাক্সে আছে। আগের দফাগুলো চলাকালীন কিন্তু করোনা কাণ্ডে এরকম মোদী সরকারের বিরোধিতা বা অসন্তোষ-সমালোচনার ঝড় ওঠেনি। এখন এই বিষয়টা সেদিকেই ঘুরে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সুকৌশলে গোটা জিনিসটাকে কেন্দ্র বিরোধী জায়গায় নিয়ে গেছেন। বিমাতৃসুলভ মনোভাব, ভ্যাকসিনেশনের সমস্যা, কেন্দ্রের গাফিলতি। গোটা জিনিসটা একটা কেন্দ্রবিরোধী। এই পরিস্থিতিতে এখন ভোটটা হবে। তবে এখন যেসব জায়গায় ভোট বাকি আছে, সেটা মূলত কলকাতা এবং তার পাশ্ববর্তী জেলায়, যেখানে ভোট হবে সেগুলো সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই বেশি দাপট। তাই স্বাভাবিকভাবে নজর থাকবে সেদিকেই।