ভালবাসা বা প্রেম একটি শাশ্বত সত্য । যুগে যুগে এই ভালবাসার তাগিদে মানুষ তার চেনা গণ্ডী পেরিয়ে অনির্দেশের পথে ছুটে চলেছে.।অজানাকে জানবার আগ্রহকে পাথেয় করে এই প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলা কোনও বাধাই মানতে রাজি নয় । তাই ভালবাসাকে চেনবার ক্ষেত্রে প্রধান শর্ত হল ভালবাসার পাত্রের মন বোঝা।
কি করে বুঝবেন আপনার ভালবাসার পাত্র আপনাকে প্রকৃত ভালবাসে কিনা? এর জন্য দরকার পর্যবেক্ষণ-শক্তি। প্রথমেই এর উত্তর খুজতে হবে নিজের মধ্যে । অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই সত্যি।আপনার মন আপনার ভালবাসার পাত্র সম্পর্কে কী ভাবছে সেটি তাকে বোঝার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
১) ভালবাসা হলে চিত্ত ভাবনাহীন
আপনি কি এই সম্পর্কে নিজেকে জড়িয়ে যথেষ্ট নিশ্চিন্তে ও আরামে আছেন? নাকি আপনার মনে বাসা বেঁধেছে ভীতি ও উৎকণ্ঠা ? যদি আপনার চলার পথটি কাঁটায় ভরা থাকে তাহলে সে পথ থেকে সরে আসার কথা চিন্তা করাই বাঞ্ছনীয় ।
২) আপন বৃন্তে ফূটে ওঠা
আপনার প্রেমিক কি চিন্তা বা বাস্তব ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দেয় না ? তার নিজের কথাকেই চরম বলে গণ্য করে? এক্ষেত্রে আপনার প্রতি তার দখলদারি করার মনোভাব বর্তমান । ভালোবাসার ক্ষেত্রে যদি যথেষ্ট পরিমানে বিচরণ ক্ষেত্র না মেলে তবে হাঁপিয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল ।
৩) পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ
সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সে কি আপনার মতামত নেয় না কি এটা সম্পূর্ণভাবে তার নিজস্ব ব্যাপার? আপনার মতামতের গুরুত্বের ওপর নির্ভর করছে আপনার প্রতি তার মানসিকতা কতটা শ্রদ্ধাশীল — এই বিষয়টি । ।সম্পর্ক গঠনের ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য অন্যতম প্রধান শর্ত ।
৪) তোমায় আমি হারাই যদি / যাহারে পেয়েছি তারে কখন হারাই
সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখার জন্য সে কি আপনার মতই সমান যত্নবান? না হলে বুঝতে হবে সম্পর্কটা তার কাছে ততটা আবশ্যক নয় যতটা আপনার কাছে।
৫) তোমারই লাগিয়া
তার আপনার প্রতি মনোভাব কি যথেষ্ট নিঃস্বার্থ ? স্বার্থপর মনোভাব আর যাই হোক, প্রেম নয় ।এক্ষেত্রে প্রকৃত ভালোবাসা সম্পর্কে চিন্তাভাবনার অবকাশ থেকে যায় ।
৬) পরিণত মানসিকতা
আপনার প্রতি আচরণে তার মানসিকতা কি যথেষ্ট পরিণত? তাহলে বুঝতে হবে সে এই সম্পর্কটির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র আবেগ নয়, যুক্তির সাহায্যে এগিয়ে চলেছে ।সম্পর্কটির বিষয়ে সে দায়িত্বশীল ও যত্নবান।
৭) মার্জনা প্রার্থনা
একটি লক্ষ্য করার বিষয় হল , ঝগড়া বা মনোমালিন্যর পর তার ‘ দুঃখিত’ বলার ক্ষমতা বা চেষ্টা । এটি যে কোনো মানুষের পক্ষেই একটি দুরূহ কাজ। নিজের আত্মাভিমানের সু- উচ্চ শিখর থেকে নেমে এসে প্রতিপক্ষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার সময় অনেক ক্ষেত্রেই নিজেকে পরাজিত মনে হয় । কিন্তু না । হার স্বীকার করার ক্ষমতা পরাজয়ের লক্ষণ নয় । বরং পরিণত মানসিকতার পরিচায়ক ।
৮) ধৈর্য ও সহনশীলতা
আপনাকে কোনো কাজের জন্য বার বার অনুরোধ বা বিরক্ত করে কী না । এমন আচরণ ধৈর্যের অভাব বোঝায়। এ ও একপ্রকার অপরিণত মানসিকতার প্রতিফলন ।
৯) গোপন কথাটি
সে আপনার কাছে কথা গোপন করে কী না ।এক্ষেত্রে তার আপনার প্রতি মনোভাবে সততার অভাব প্রতিফলিত হয় । প্রেমের ক্ষেত্রে এটী চরম প্রতিবন্ধক । পারস্পরিক বিশ্বাস যেখানে নেই সেখানে প্রেমের স্থায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক ।
১০) কথা ও কাজের তারতম্য
সবশেষে বলা যায়, একজন মানুষের মূখের কথার চেয়ে তার আচরণকে গুরুত্ব দেওয়া অধিক বিচক্ষণতার কাজ। সে কী বলে তার থেকে সে কী করে তার মধ্য দিয়ে তার চরিত্র প্রতিফলিত হয় ।
এই সমস্ত বিষয়গুলি থেকে পরস্পরের মানসিকতা বোঝা নিছক কঠিন ব্যাপার তো নয়ই বরঞ্চ এগুলি একটি সম্পর্কের অনুসন্ধান চালাবার উপভোগ্য সোপান । আপনারা কী বলেন?
আরো পড়ুন : ক্রিকেট বলিউড প্রেম
[…] পড়ুন : প্রকৃত ভালবাসা চেনার […]