নিজস্ব সংবাদদাতা- তৃণমূল নেত্রী শিশির অধিকারীকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে তাহলে কি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন যে অধিকারী পরিবারের বাকি দুই সদস্য‌ও দল ছেড়ে দিক? কারণ দলের জন্ম লগ্ন থেকেই বলতে গেলে শিশির অধিকারী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তারা আমলেই দল জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্র‌ই দখল করে।

সবচেয়ে বড় কথা যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সাফল্যের ওপর ভর করে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল, সেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মূল কান্ডারী যদি হন শুভেন্দু অধিকারী তাহলে তার বাবা শিশির অধিকারী ছিলেন ওই আন্দোলনের মূল কৌশল রচনা দায়িত্বে। অর্থাৎ, বলাই যায় অধিকারী পরিবারের তৈরী করে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়েই দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসন হটিয়ে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই প্রশ্ন উঠছে এরকম একজন দক্ষ সংগঠককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে ঠিক কোন বার্তা দিতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী?

তৃণমূলের অভ্যন্তরে কান পাতলে শোনা যায় বিভিন্ন শীর্ষস্তরের নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগের পিছনে শিশির বাবুকে পরক্ষকে দায়ী করে থাকেন। তাদের বক্তব্য শিশির অধিকারী চাইলেই শুভেন্দুকে বুঝিয়ে দলে রাখতে পারতেন, কিন্তু তিনি সেরকম কোনো উদ্যোগ নেননি।এই নেতাদের অভিযোগ এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক চান তাঁর পুত্র সরকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থলাভিষিক্ত হন!

জেলা,
সৌমেন মহাপাত্র

জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় শিশির অধিকারী জানান তাকে না জানিয়েই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তাই তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না! প্রসঙ্গত শুভেন্দু দল ছাড়ার পরে সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিম, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতারা কাঁথিতে গিয়ে অধিকারীদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে জনসভা করেন। সেই জনসভা থেকে তারা নাম না করে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেন শিশির বাবুকে। তারপর থেকেই তিনি দলের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। রাজনৈতিক মহলের মতে শিশির অধিকারী যে আর কোনও মতেই তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় হবেন না তা বুঝতে পারার পরেই তাকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

“অধিকারী বিরোধী সৌমেন মহাপাত্রকে পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন জেলা সভাপতি করার মধ্য দিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিলেন অধিকারীদের কাউকেই আর তাদের দরকার নেই”,  এই মন্তব্য করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ এক সদস্য।