পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির কেরিয়ারের কথা ভাবছেন?
দেশে চাকরির বাজার পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জের কথা নতুন করে বলার নেই। দিনে দিনে চাকরির প্রতিযোগিতা আকাশ ছুঁয়েছে। একটি চাকরির জন্য হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থী আর প্রতিযোগিতা যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যেই। এমনিতেই দেশে ভালো চাকরি পাওয়া ‘সোনার হরিণ’ হাতে পাওয়ার মতো।
যারা সদ্য পড়াশোনা শেষ করে চাকরির কেরিয়ারে ঢুকবেন ভাবছেন, তারা কিছু বিষয় খেয়াল রেখে চর্চা করলেই নিজেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে পারবেন।
১| পেশা নির্বাচনের আগে ভাবুন – অনেক শিক্ষার্থী ভালো ফলাফলের পর যেকোনো মর্যাদাপূর্ণ পেশায় নির্বাচিত হতে পারেন। আবার অনেকেই শিক্ষারত অবস্থায় এই বিষয়ে ভাবেন না ফলে, ভবিষ্যতে তাকে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। বুঝে উঠতে পারেননা কোনটি তার জন্য সঠিক পেশা। পেশা নির্বাচনের আগে এখন থেকে ১০-২০ বছর পরের অবস্থা নিয়ে চিন্তা করুন। কারণ সময়ের সাথে সাথে পেশার গুরুত্ব হারায়, তাই ভেবেচিন্তে এগোনো উচিত।
২| প্রাথমিক ধাপ থেকে শুরু করুন – প্রাইমারি পড়াশোনা শুরুর দিকে ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা থাকা ভালো। তবে বয়স অনুযায়ী পরিপক্কতার জন্য এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত। নবম শ্রেণি থেকে মনস্থির করে এগোনো উচিত। সেই সময় থেকে শুরু হয় বিভাগ( ব্যবসা, বিজ্ঞান, মানবিক ) নির্বাচন। সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন থেকে সেই বিষয়ে পড়া শুরু করা ভালো।
৩| পেশাজীবীদের থেকে জানুন – যে পেশায় যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করেছেন সেই পেশার ধারণা নিতে পারেন। সম্ভব হলে সেই পেশায় যুক্ত মানুষের সাথে সময় কাটান। এতে আপনি অনেকটা কাছে থেকে সেই পেশার সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পারবেন। অন্তত একদিন সময় বুঝে দেখে নিন কীভাবে তারা কাজ করেন। ফলত, আপনি এই পেশার সাথে মানানসই কি না, তা সহজেই জানতে পারবেন।
৪| দক্ষতা বাড়ান – অনেক ফাঁকা সময়ে আপনি করতে পারেন বিভিন্ন অনলাইন কোর্স। বর্তমান সময় বেশ জনপ্রিয় হয়েছে ফ্রি অনলাইন সার্টিফিকেট কোর্স । চাকরির ইন্টারভিউ থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে উন্নতির অনেকটা নির্ভর করে ভালো ইংরেজি জানা ও তার সঠিক ব্যবহারের ওপর। বিশেষ করে যারা মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ইংরেজি ভাষার সাথে অন্যান্য ভাষার দক্ষতা বাড়ান। যেকোনো ভাষা শিখতে বইয়ের পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যমের ( ইউটিউব ) সাহায্য নিয়ে চর্চা শুরু করুন।
৫| ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি – আগে থেকেই চাকরির ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি নিয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখুন। নিজের সম্পর্কে বলা অভ্যাস করুন।
ইন্টারনেটে চাকরির ইন্টারভিউয়ের বিভিন্ন প্রশ্ন ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তার কীভাবে উত্তর দেবেন, সে সম্পর্কে অনেক লেখা পাওয়া যায়, সেগুলো থেকে নিজের দক্ষতা বাড়ান। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগে ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুন। ইন্টারভিউয়ের পোশাকের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন থাকুন।
৬| সাধারণ স্কিলগুলির চর্চা – বিভিন্ন চাকরি পেতে গেলে সাধারণত যেগুলি জানা দরকার যেমন- মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্টের কাজ ও রির্পোট বানানো ও ইমেল করা। এই স্কিলগুলির ওপর ভিত্তি করে আপনি খুব সহজেই আপনার চাকরির জন্য সুযোগ্য হয়ে উঠতে পারবেন।
৭| উপযোগী অধ্যাবসায় – আমাদের দেশে পড়াশোনা করা মূলত চাকরি করার আশায়। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পড়া শুরু করতে হয়। নিজের নির্বাচিত পেশায় জায়গা করে নিতে লাগে কঠোর অধ্যাবসায়। তবে চর্চা ছাড়া যা কখনও সম্ভব না। লিখিত কোনো পরীক্ষায় সব বিষয়েই ভালো করে প্রস্তুতি নিন কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ে সর্বনিম্ন পাস নম্বর পেতে হয়।
আজকালকার যুগে সবাই চায় ভালো চাকরি। নিজের পেশা নির্বাচনের আগে এই তথ্যগুলি জেনে নিজের পথ বাঁচুন। তাহলেই আপনার চাকরির সাফল্যের চাবিকাঠি আপনার হাতের মুঠোয়।