নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড়। অবস্থা এই পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে যে বিজেপি তাদের নেতাদের টিভির পর্দায় মুখ দেখানো বন্ধের ফরমান জারি করেছে। কিন্তু নূপুর শর্মা কে? জেনে নেওয়া যাক।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ছিলেন নূপুর শর্মা, যদিও তাঁর সেই পদ আর নেই। বিতর্কিত মন্তব্যের পর হাতছাড়া হয়েছে আগেই। কানপুরে হজরত মহম্মদকে নিয়ে সেই বিতর্কিত মন্তব্যের পর প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন অনেক মানুষ। তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে বিজেপি সভাপতি আদেশ গুপ্ত জানিয়ে দেন, নুপুরকে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে সরানো হচ্ছে। তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হিন্দু কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হওয়ার পর আইনের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেন নূপুর। কলেজের সময় থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি নূপুরের। সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী হন ২০০৮ সালে। ওই সালেরই নভেম্বরে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত এসএআর গিলানিকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে এই বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে। নূপুরের এক সঙ্গী অভিযুক্ত অধ্যাপক গিলানির মুখে থুতু ছিটিয়েছিলেন। এই সময় খবরের শিরোনামে ছিলেন নূপুর। গিলানির একটি আলোচনা সভায় এবিভিপির কর্মীদের নিয়ে পৌঁছে ভাঙচুর শুরু করেন তিনি। গিলানিকে বিভিন্ন প্রকার অপদস্থ করতেও দেখা যায় তাঁকে। সেই মুহূর্তেই তাঁর সঙ্গী থুতু ছেটান গিলানির মুখে।
এই ঘটনার পরে পরেই পদোন্নতি হয় তাঁর। বিজেপির যুব মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হন তিনি। দিল্লিতে বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য হন তিনি। ২০১৫ সালে দিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হন তিনি। যদিও শেষমেশ ৩১,৫৮৩ ভোটে হেরে যান। ২০১৭ সালে দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হন তিনি।এখন তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ইতিমধ্যেই নূপুরের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র, হায়দ্রাবাদে একাধিক এফআইআর হয়েছে। মুম্বাই পুলিশ যার জন্য শীঘ্রই সমন পাঠাবেন। এই বিতর্কে নিরব প্রধানমন্ত্রী নিজেও। যেখানে মুসলিম দেশগুলি ভারতের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সেখানে কেন চুপ করে রয়েছেন মোদি, সে বিষয়ে সরব বিরোধীরা।
রাহুল গান্ধী এ বিষয়ে বলেছেন, ” ঘরে ভাঙন ধরেছে বলে বহির্বিশ্বের কাছেও দুর্বল হয়ে পড়েছে ভারত ” ।রবিবার দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহের স্বাক্ষর করা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে বিজেপি। তাতে পরিষ্কার উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিজেপি কোনও ধর্মেরই বিরুদ্ধাচরণ করেনা। কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়কে অবমাননা করার কোনও ইচ্ছাও পোষণ করে না। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেকের নিজস্ব ধর্ম পালন করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।