নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটের প্রচারপর্ব চলার সময় বারংবার বিজেপি দাবি করেছিল যে, তাঁরা ২০০-র বেশি আসনে জিতে বাংলার ক্ষমতা দখল করবে। তবে ভোটের ফলাফল বেরোতেই দেখা যায়, বিজেপির সেই দাবি পুরোপুরিই স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেছে। দেখা যায়, ২০০-র বেশি আসন দখল করে ফের একবার রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ৭৭জন। তবে এবার আরও কমলো বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা। দু’জন কমে তা হতে চলেছে ৭৫। দলের দুই সাংসদ-বিধায়ক, বিধায়ক পদ গ্রহণ না করে সাংসদ পদেই বহাল থাকবেন। বিজেপি সূত্রে এমনটাই খবর মিলেছে। দলের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনার পরই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবারে বিধানসভায় মোট পাঁচজন সাংসদকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। চুঁচুড়া থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়, টালিগঞ্জ থেকে বাবুল সুপ্রিয় এবং তারকেশ্বর থেকে স্বপন দাশগুপ্ত বড় ব্যাবধানে হারলেও, কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিক এবং নদিয়ার শান্তিপুরে জগন্নাথ সরকার জিতে গিয়েছেন। নিশীথ তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী উদয়ন গুহকে মাত্র ৫৯ ভোটের ব্যাবধানে হারিয়েছেন। অন্যদিকে, জগন্নাথ সরকার তৃণমূলের অজয় দে’কে হারিয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার ভোটে।
নিয়ম অনুযায়ী, এক ব্যক্তি একই সঙ্গে সাংসদ এবং বিধায়ক পদে থাকলে ৬ মাসের মধ্যে কোনও একটি পদ তাঁকে ছাড়তে হয়। কোচবিহার এবং রানাঘাটের দুই সাংসদ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকেই জল্পনা চলছিল এঁরা দু’জন কোন পদ ধরে রাখবেন? সাংসদ পদ নাকি বিধায়ক পদ? গোপন সূত্রে খবর, এঁরা দু’জনই সাংসদ পদে বহাল থাকতে চেয়েছিলেন এবং তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিধানসভায় নির্বাচিত হলেও এঁরা বিধায়ক পদে শপথ নেননি। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়, তাহলে হয়তো এই দুই নেতা সংসদেই থাকতে চলেছে। এরপর জানা যায়, দিল্লীতে দলের কেন্দ্র ও রাজ্য নেতারা বৈঠক করে সেই জল্পনাতেই সিলমোহর দেন। দুই সাংসদই বিধায়ক পদ ছাড়ছেন। তবে, কবে সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
আসলে, একুশের বিধানসভার ফল প্রকাশের পর রাজ্যে এখন ঘাসফুলের হাওয়া। দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের ভাবমূর্তিও ধাক্কা খেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে দুই কেন্দ্র থেকে সাংসদদের জিতিয়ে আনার ঝুঁকি নিতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। তাঁরা বরং, তলায় তলায় শান্তিপুর এবং কোচবিহার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
তবে এই দুটি আসনের উপনির্বাচনের পাশাপাশি বাংলার আরও একাধিক আসনে আগামী ৬ মাসের মধ্যে ভোট হতে পারে। তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী কাজল সিনহার মৃত্যুতে খড়দহ কেন্দ্রটি বর্তমানে বিধায়ক শূন্য। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে দুই প্রার্থীর মৃত্যুর পর দুই কেন্দ্রে ভোট হওয়া এখনও বাকি। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী নিজে যদি এগুলির বাইরে অন্য কোনও আসনে দাঁড়াতে চান, সেখানেও উপনির্বাচন করা প্রয়োজন।