দেশ জোড়া কৃষক আন্দোলনের ফলে চাপে পড়ে বিজেপি কৃষক বন্ধু ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। সেই উপলক্ষে আজ পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া গিয়ে বাড়ি বাড়ি শষ্য ভিক্ষা করলেন।
‘মুষ্টি ভিক্ষা’ নামে এই কর্মসূচিতে কাটোয়ায় পাঁচটি কৃষক পরিবারে গিয়ে নাড্ডা এক মুঠো করে চাল ভিক্ষা করেন। বিজেপি সভাপতির কাঁধে একটি কমলা রঙের ঝোলা দেখা গিয়েছে। প্রতিটি বাড়ি থেকে চাল নিয়ে সেই ঝোলার মধ্যে তিনি নিজেই রেখে দেন। আসলে এই কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের কৃষকদের মন জয় করার চেষ্টা করেছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গে নাড্ডার আজকের কর্মসূচি নানা কারণে অনেক দিক থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ। চাল ভিক্ষা করার পর স্থানীয় কৃষক মথুরা মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজন করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সামনেই এই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন, স্বাভাবিকভাবেই এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছেন এই বিজেপি নেতা। একদিকে যেমন উত্তাল কৃষক আন্দোলনের মধ্যে দাঁড়িয়েও কৃষকদের প্রতি বার্তা দিতে চেয়েছেন, তেমনি পূর্ব বর্ধমান জেলায় দলের শক্তি বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছেন।
এই জেলার বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে থাকলেও সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে দীর্ঘদিন সেভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা যায় নি। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ আছে। এদিকে বর্ধমান-পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুনীল মণ্ডল ইতিমধ্যেই দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি চেষ্টা করছে পূর্ব বর্ধমানে তাদের সাংগঠনিক ক্ষমতার পাশাপাশি জনভিত্তি আরো বেশি করে বাড়িয়ে তুলতে, যাতে একুশের নির্বাচনে এই জেলার বেশিরভাগ বিধানসভা কেন্দ্রে নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়।
কাটোয়ায় এসে প্রথমে জনসভায় বক্তব্য রাখেন জেপি নাড্ডা। সেখানে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, “তৃণমূল সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবকিছুতেই খালি না না করেন, আগামী মে মাসে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সবকিছুতেই হ্যাঁ হবে।” কৃষিপ্রধান পূর্ব বর্ধমানে দিনভর কর্মসূচি পালন করে কৃষক বিক্ষোভের আবহে দলের ক্ষয়ক্ষতি কতটা মেরামত করতে পারলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তা আগামী বিধানসভা নির্বাচনেই প্রমাণ হয়ে যাবে।