নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে ফের বাংলায় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। অবশেষে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে এবার আরও একবার কড়া লকডাউনের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। আজকেই নবান্ন থেকে সেই ঘোষণা করে ফেলেছে রাজ্য। তবে শুধুই তো করোনার সংক্রমণ নয়, পাশাপাশি অক্সিজেনের চাহিদাও বর্তমানে আকাশছোঁয়া। তাই এমন সঙ্কটের সময়ে রাজ্যের ২৫টি মেডিক্যাল কলেজ ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আরও ৩৫টি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিল মমতা সরকার। আর এই অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে।
ঘাটতি মেটাতে এদিন স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের সময়ে যেহেতু স্বাস্থ্য দফতর বহুবিধ কাজে ব্যস্ত, তাই চটজলদি এই প্লান্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে। দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে টেন্ডার করা হয়ে গিয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, আগামী জুন মাসের মধ্যেই যাতে এই প্লান্টগুলি গোটা রাজ্যের চালু করে ফেলা যায়। এই ভয়ঙ্কর কোভিড পরিস্থিতিতে ওই হাসপাতালগুলির উপর চাপ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর।
কলকাতার এসএসকেএম, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি, বাঁকুড়া খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলিতেও অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হবে। যদিও, এই হাসপাতালগুলিতে আগে থেকেই অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে তা একদমই পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছে নবান্ন। তাই, তড়িঘড়ি অতিরিক্ত অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ কমে গেলেও, নভেম্বর মাসে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলেই আশঙ্কা চিকিৎসক মহলের।
আর সেই কারণেই পাকাপাকি ভাবে সরকারি বড় হাসপাতালগুলির পাশাপাশি, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও স্থায়ীভাবে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর এই প্রকল্প বাবদ রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই অর্থেই এই প্লান্টগুলি তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই আমরা দ্রুততার সঙ্গে এই কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি, খুব শীঘ্রই বাংলা জুড়ে এই ৩৫টি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি হয়ে যাবে। যাতে আখেরে লাভ হবে রাজ্যের জনগণেরই।’’