নিজস্ব সংবাদদাতা: মার্চের মাঝামাঝি থেকেই এবছর সূর্যের তাপে জেরবার সাধারণ মানুষ। তার ওপর আবার রাজ্যে ভোটের মরসুম। সবমিলিয়ে রীতিমত ফুটছে গোটা বাংলা। আর এইসময় সবথেকে বেশি উত্তপ্ত এলাকা বোধহয় নন্দীগ্রাম। কারণ, এখানে তৃণমূল ও বিজেপির প্রার্থী দুই হেভিওয়েট। তৃণমূলের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির তরফে শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর হয়ে আজ প্রচার করলেন অমিত শাহ। বিকেলে হাজির হবেন মিঠুন। তবে তৃণমূলের হয়ে শুধুই মমতা-ই হাজির। তারকা প্রচারক না, প্রার্থী ও নেত্রীতেই ভরসা রাখছে দল। আর এভাবেই এতদিনের টানটান প্রচারের শেষ দৃশ্যের চিত্রনাট্য রচিত হল বহু আন্দোলনের সাক্ষী এই নন্দীগ্রামে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ প্রচার কর্মসূচি শুরু করেন সকাল ১২টায়। নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়া বাজার থেকে রায়পাড়া পর্যন্ত রোড শো করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। দু’জনের সঙ্গেই মিছিলে হাজির ছিলেন অসংখ্যা বিজেপি সমর্থক। নন্দীগ্রামে রোড শো-এর পরে ডেবরায় একটি রোড শো করেন অমিত। রেয়াপাড়ার সাংবাদিক বৈঠকে এসেও অমিতের মুখে ছিল নন্দীগ্রামের কথা। মঙ্গলবার অভিযোগ ওঠে, নন্দীগ্রামে এক বিজেপি সমর্থকের স্ত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
অমিত সাংবাদিক বৈঠক থেকে বলেন, ‘‘মমতা যেখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে রয়েছেন, সেই অঞ্চল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নারী সুরক্ষার কথা বলা মুখ্যমন্ত্রী সেই ঘটনাকেন্দ্রের এত কাছে ছিলেন, তবুও এখনও কেউ গ্রেফতার হল না। পশ্চিমবঙ্গে নারী সুরক্ষার অবস্থা সত্যিই কেমন?’’ নন্দীগ্রামে ভোটের ফল কী হতে পারে, সেই বিষয়েও বেশ আত্মবিশ্বাসী অমিত। তিনি দাবি করলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ সবই দেখছেন। তাঁরা ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবেন। নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী বিপুল ভোটে জয় পাবেন।’’
এদিকে, নন্দীগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে ছোট ছোট অনেকগুলি সভা করছেন মমতা। আজ নন্দীগ্রাম ব্লক ১, ভেকুটিয়ায় সভা করেছেন তিনি। একটি মিছিলও করেছেন। সেখানে অদিতি মুন্সি, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো স্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিতরা থেকেছেন। কিন্তু ধারে ভারে তাঁরা মিঠুন বা অমিত শাহের মতো নন। তাই সেখানে ‘শো-স্টপার’ একজনই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালের মতো এদিনও তিনি বললেন, ‘‘হাজার হাজার টাকা চুরি করেছে গদ্দাররা। আজ আমি যখন একবার নন্দীগ্রামে ঢুকেছি, তখন আর বেরবো না।’’ নন্দীগ্রামে পরিস্থিতি যতই উত্তপ্ত হোক, দলীয় কর্মীদের মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টা মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। ভাল করে ভোট দিন। ভোটের সময় কোনও অশান্তি, দাঙ্গায় যাবেন না।’’ প্রচারের আজকেই শেষ। এবার অপেক্ষা পরশুদিনের। কারণ, সেদিনই সাধারণ মানুষ নিজেদের রায় জানাবে ভোটবাক্সে, যার ফলাফল জানা যাবে আগামী ২ মে।